হোম > ছাপা সংস্করণ

তিন কোটি টাকার আম রপ্তানির আশা

রিমন রহমান, রাজশাহীরিমন রহমান, রাজশাহী

রাজশাহী থেকে চলতি মৌসুমে প্রায় তিন কোটি টাকার আম রপ্তানির আশা করছে কৃষি বিভাগ। জেলার বাঘা উপজেলার ২২০ জন চাষি প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন আম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির উপযোগী করে চাষ করেছেন। এই চাষিরা রপ্তানিকারকদের সঙ্গে চুক্তিও করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ চাষিরা আম পাড়তে শুরু করবেন।

তবে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে রপ্তানিকারকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হননি এমন একজন চাষি ইতিমধ্যে ৫০০ কেজি গোপালভোগ আম সুইডেনে পাঠানোর জন্য রপ্তানিকারকের কাছে পাঠিয়েছেন। আমবাগানটি রাজশাহী নগরীর জিন্নানগর এলাকার আনোয়ারুল ইসলামের। তিনি রাজশাহী এগ্রো ফুড সোসাইটির সভাপতি। প্রতিবছরই তিনি তাঁর বাগানের ফ্রুট ব্যাগিং করা আম বিদেশে পাঠিয়ে থাকেন।

বাঘা ছাড়া অন্য কোনো স্থানের চাষিদের চুক্তিবদ্ধ না করানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কৃষি বিভাগ শুধু বাঘা উপজেলার চাষিদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় আনে। কিন্তু আম তো রাজশাহীর সবখানেই হয়। পবা থেকেও আম যায়। বাঘার চাষিদের পুরোনো একটা তালিকা কৃষি বিভাগের কাছে আছে এবং শুধু তাঁরাই কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় আসেন। আমাদের যেহেতু কিছু বলা হয় না, তাই নিজেদের মতো করে আম পাঠাই।’

আনোয়ারুল বলেন, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এনজেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এন হোসেন সজলের মাধ্যমে তিনি সুইডেনে আম পাঠাচ্ছেন। শুক্রবার আম পাড়ার পরই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গত শনিবার উড়োজাহাজে করে আম নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল এনজেল গ্রুপের। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যাগিং করা আম খুবই ফ্রেশ। আমের কাছে কীটনাশক তো দূরের কথা, একটা পিঁপড়াও যেতে পারে না। তাই হট কেকের মতো আম শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

রপ্তানির উদ্দেশ্যে আনোয়ারুল ইসলাম আম পেড়ে ঢাকায় পাঠানো শুরু করলেও সে খবর নেই কৃষি বিভাগের কাছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাঘা উপজেলার ২২০ জন চাষি ৩০০ মেট্রিক টন আম দেবেন বলে হটেক্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই হিসাবটা শুধু আছে। তবে চাষি ও রপ্তানিকারকদের উদ্যোগেই উড়োজাহাজে আম পাঠানো হয় ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা নেই।

বাঘা উপজেলার আমচাষি শফিকুল ইসলাম সানা বলেন, কয়েক বছর ধরেই রপ্তানিকারকের মাধ্যমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে আম পাঠাচ্ছেন তিনি। এবারও ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে রপ্তানি উপযোগী করে আম চাষ করেছেন। আগামী ১ জুন থেকে তিনি আম পাড়বেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রপ্তানি উপযোগী বেশি আম উৎপাদন করতে পারি, কিন্তু রপ্তানি হয় কম। তবে এবার অন্য বছরের চেয়ে আমাদের আমের চাহিদা বেশি। সেই হিসাবে মনে করছি রপ্তানি বাড়বে।’

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ‘চুক্তিবদ্ধ চাষিদের আমরা প্রশিক্ষণ দিই। তাঁদের বাগানে সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা শেখানো হয়। ব্যাগিং পদ্ধতিতে ফ্রেশ আম উৎপাদনের বিষয়টিও তাঁদের শেখানো হয়। এই কাজটি শুধু বাঘা উপজেলায় হয়।’

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চুক্তিবদ্ধ চাষিরা লক্ষণভোগ বা লখনা, হিমসাগর বা ক্ষিরসাপাতি এবং ল্যাংড়া আম বিদেশে রপ্তানির উপযোগী করে উৎপাদন করেন। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ বা লখনা ও হিমসাগর ২৮ মে থেকে নামানো শুরু হয়েছে। ৬ জুন থেকে নামানো হবে ল্যাংড়া। কয়েক দিন পর এসব আম বিদেশে পাঠানো শুরু হবে। রাজশাহী থেকে এ বছর ৩০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হলে তিন কোটি টাকা পাবেন চাষিরা।

রপ্তানি করতে হলে রপ্তানিকারকদের আম ঢাকায় সেন্ট্রাল প্যাকেজিং হাউসে নিতে হয়। সেখানে আমের মান যাচাই করে গুণগত প্যাকেটিং হয়, যাতে আম বেশি সময় ভালো থাকে। তারপরই তা রপ্তানির জন্য ছাড়পত্র পায়। রাজশাহীতে এ বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এসব বাগানে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে। আমে রাজশাহীর অর্থনীতিতে যোগ হতে পারে ৯০০ কোটি টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) উত্তম কুমার কবিরাজ বলেন, গত বছর চাষিরা রপ্তানি করা আমে কেজিপ্রতিতে দাম পেয়েছিলেন ৯০ টাকা। এবার ফলন একটু কম বলে দাম বেশি। এখনই বাজারে ভালো আম ৬০ টাকা কেজি। সব চাষির আম যদি রপ্তানি না-ও হয়, সে ক্ষেত্রেও তাঁরা ভালো দাম পাবেন। কারণ, ব্যাগিং করা ফ্রেশ আমের দাম এমনিতেই বেশি হয়। তবে এবার কোভিডের সংক্রমণ না থাকায় বেশি পরিমাণে আম রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ