হোম > ছাপা সংস্করণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঁচ সন্ত্রাসী গ্রুপ বেপরোয়া

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তৎপর রয়েছে ৫টি সন্ত্রাসী গ্রুপ। ক্যাম্পে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে মাদক চোরাচালান, অস্ত্র বেচাকেনা ও আধিপত্যকে কেন্দ্র করে এ গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ বুধবার রাতে উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন সাব মাঝি মোহাম্মদ সলিম (২৮)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) তিনি মারা গেছেন। এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ৮-ডব্লিউ নম্বর শিবিরের এ-৫৮ ব্লকে মিয়ানমারের দুই সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসা ও আরএসওর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়।

এ সময়ে উম্মে হাফসা (১১) এবং আবুল ফয়েজ (৮) নামের দুই শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ দুই শিশু আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যেকোনো সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘাতে থাকা শরণার্থীদের পাঁচটি গ্রুপ হচ্ছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরসা), আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরএসও), নবী হোসেন গ্রুপ, মুন্না গ্রুপ এবং ইসলামি মাহাজ গ্রুপ।

চলমান সংঘাতের ঘটনায় ৩৩টি ক্যাম্পে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। উল্লিখিত পাঁচ গ্রুপের মধ্যে আরসা ছাড়া বাকি চার গ্রুপ এক কাতারে এসে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে। এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করে পুলিশের ওই কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ায় (শূন্যরেখায় থাকা) রোহিঙ্গাদের একটি ক্যাম্পে সংঘর্ষের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, এ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চার হাজার রোহিঙ্গা ছিল, যা আরসার নিয়ন্ত্রিত ঘাঁটি ছিল।

গত ১৮ জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের অন্য সংগঠন আরএসও এই ক্যাম্পে হামলা করে বেশ কিছু অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। এর পর থেকে উখিয়া ও টেকনাফ দুই উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যেকোনো সময় আরও বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।

সূত্র জানায়, বর্তমানে আরসার নেতৃত্বে রয়েছে আতি উল্যা জুনুনি। তিনি শূন্যরেখার ওপারে মিয়ানমার অংশে থাকেন। টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আরসার প্রভাব রয়েছে। ৮ নম্বর ক্যাম্পে নবী হোসেন গ্রুপের কিছু প্রভাব রয়েছে। নবী হোসেন গ্রুপের নেতা নবী হোসেন মিয়ানমারের শূন্যরেখার কাছে অবস্থান করছেন। রোহিঙ্গা ২ নম্বর ক্যাম্পে মুন্না গ্রুপও সক্রিয়। ইসলামি মাহাজ গ্রুপের সঙ্গে ২০২১ সালের অক্টোবরে মসজিদে গোলাগুলিতে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় আরসা সদস্যরা ক্যাম্প ছেড়ে চলে যায়।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত দুই বছরে টেকনাফ ও উখিয়া থানায় ৪১টি হত্যা মামলা এবং ৯৭৮টি মাদক মামলা হয়েছে। উদ্ধার হয় ৩৮ লাখ ইয়াবা। এ সময় দুই থানায় ৯৭টি অস্ত্র মামলা ও ৪০টি অপহরণ মামলা হয়। অন্তত ২০০ ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।

রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (এডিআইজি) ছৈয়দ হারুনুর রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘাতে থাকা শরণার্থীদের পাঁচটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন, আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি, নবী হোসেন গ্রুপ, মুন্না গ্রুপ এবং ইসলামি মাহাজ গ্রুপ অন্যতম। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ