জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের বাগইল গ্রাম। উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে বাগইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের উত্তর পাশ ঘেঁষে রয়েছে একটি কেওড়া বন। বনটি দিন দিন বিস্তার লাভ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, এ বনের গাছ কাটলে তাঁদের অমঙ্গল হবে। এ কারণে কেওড়া বন বিস্তৃত হয়ে গ্রাস করছে কৃষিজমি।
এই কেওড়া বনের অবস্থান বাগইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের উত্তর প্রান্তে। স্থানটির চারদিকে ঘন কেওড়ার জঙ্গল। মূল জায়গাটির পূর্ব, উত্তর এবং পশ্চিম দিক সম্পূর্ণ ঘন কেওড়াগাছ ঘেরা। দক্ষিণ দিকের লতাগুল্মের ফাঁক দিয়ে ভেতরে ঢুকলে ৪-৫ শতাংশ ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এর উত্তর দিকে রয়েছে অপেক্ষাকৃত একটু উঁচু জায়গা।
স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, এটি একটি কামেল পীর কিংবা বুজুর্গ ব্যক্তির মাজার। এর ১৫-২০ ফুট দক্ষিণে প্রাচীন ইটের তৈরি দেয়ালের অংশ। উত্তর দক্ষিণে লম্বালম্বি ৩ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ৬ ফুট দীর্ঘ একটি দেয়ালের ভগ্নাংশ রয়েছে। যার পূর্ব পাশে গাত্রের মাঝখানে একটি ও দুই পাশে দুটি অপেক্ষাকৃত ছোট মেম্বর (উঁচু জায়গা) রয়েছে।
গ্রামবাসী রেফাজউদ্দীন (৭৫) বলেন, তাঁর পূর্ব পুরুষদের কাছে থেকে শুনতে পেয়েছেন এখানে একটি মসজিদ ছিল। সেখানে নামাজও পড়া হতো। পীরপাল বা দরগা নামের খ্যাত এই জায়গাটি চারদিকে কেওড়ার প্রাচীর যেন স্থানটিকে পাহারা দিয়ে রক্ষা করে চলেছে।
আরেক প্রবীণ গ্রামবাসী ফারাজউদ্দীন (৮০) বলেন, এই কেওড়াগাছগুলো ক্রমান্বয়ে ধেয়ে যাচ্ছে ব্যক্তিমালিকানায় থাকা ফসলি জমির দিকে। ক্রমবর্ধমান এই কেওড়া বনে কেওড়াগাছগুলো কাটলে জমির মালিকের ক্ষতি হয়। এমন ঘটনার উল্লেখ করেন অধিকাংশ গ্রামবাসী।
ফারাজউদ্দীন আরও বলেন, মূল দরগার জায়গাটি ২৫-৩০ শতাংশ হলেও বর্তমানে তা দেড় বিঘারও বেশি জায়গা নিয়ে বিস্তৃত। ইতিমধ্যে আব্দুল বারিক, আন্তাজ আলী, হাড়ি মন্ডল ও মোকসেদ আলীর বেশ কিছু পরিমাণ জায়গা এই কেওড়া বনের দখলে চলে গেছে।