মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ধর্ষণের অভিযোগে জেলে থাকা মীর লিয়াকত আলী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান। গত মঙ্গলবার চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ঘোষিত মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে তাঁর নাম রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে উপজেলার কোলা ইউপি চেয়ারম্যান মীর লিয়াকত আলীর খাসকামরায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সিরাজদিখান থানায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে দুজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত চেয়ারম্যান মীর লিয়াকত আলীকে জেলহাজতে পাঠান। বর্তমানে তিনি জেলেই রয়েছেন।
নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মীর লিয়াকত আলী জেলে রয়েছেন। তাঁর পক্ষে আমাদের কাছে সিভি পাঠানো হয়। উপজেলা থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সবার আবেদন জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠানো হয়। এখান থেকে কারও নাম বাদ দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। জেলা আওয়ামী লীগ যাঁকে ইচ্ছা বাদ দিয়ে নাম কেন্দ্রে পাঠাতে পারেন। মীর লিয়াকত আলীর নামটি তাঁরা কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘মীর লিয়াকত আলী সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি বর্তমানে একটি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে আছেন। তবে অভিযোগটি বিচারাধীন। তাঁর পক্ষে তাঁর ছেলে চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন জমা দেন। আমরা অন্যদের সঙ্গে তাঁর নামের তালিকাটিও কেন্দ্রে পাঠাই এবং সেখানেও আমরা উল্লেখ করে দিই যে তিনি বর্তমানে জেলে আছেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাঁকে কোলা ইউনিয়নে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে নাম ঘোষণা করেছে।’
কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি মনোনয়ন জন্য আবেদন করলে উপজেলা আওয়ামী লীগ তাঁদের নাম বাদ দিয়ে আপনাদের কাছে তালিকা পাঠাতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে লুৎফর রহমান বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ বিতর্কিত থাকলে, দলে অনুপ্রবেশকারী হলে, চাইলেই উপজেলা কমিটি তাঁদের নাম বাদ দিয়ে আমাদের কাছে পাঠাতে পারে। আমাদের কাছে আসা নামগুলো যাচাই-বাছাই করে পরে কেন্দ্রে পাঠাই।’
উপজেলায় আগামী ২৬ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৯ নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ৭ ডিসেম্বর।