নওগাঁর পত্নীতলার নজিপুরের কাঞ্চনদিঘিপাড়া গ্রামে পাখির আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। ওই গ্রামের মানুষের ঘুম ভাঙে পাখির কলকাকলীতে। কাঞ্চনদিঘির পাড়ে যেতেই চারপাশে চোখে পড়বে পাখির মিলনমেলা।
জানা গেছে, কাঞ্চন গ্রামেই হজরত জহর উদ্দীন (র.) মাজার। ওই মাজারের সামনে দিঘির পানিতে এবং চারপাশের গাছগুলোতে দিন-রাত পাখিরা কিচিরমিচির করে। সকালে পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে দিঘিপাড়া গ্রামে বসবাস করা মানুষের। তবে কিছু পাখি সকাল হলে উড়ে যায়, আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসে।
সরেজমিন দেখা গেছে, শীতের আগমনে দিঘিতে ঝাঁকে ঝাঁকে এসেছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো দিঘি পরিণত হয় পাখির স্বর্গরাজ্যে। পাখিদের অবাধ বিচরণ ও কিচিরমিচির কলতানে মুখর এ দিঘিটি। ঝলমল করা রোদে দিঘিতে ও গাছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে আছে শামুখখোলসহ নানা প্রজাতির পাখি। গাছের ডালে বাসা বেঁধেছে তারা। বিকেল যত ঘনিয়ে আসছিল, আশপাশের খোলা মাঠ থেকে দলবেঁধে উড়ে আসছিল পাখির ঝাঁক।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সকালে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে কিছু পাখি। সন্ধ্যা নামলেই দিঘিপাড়ের গাছগুলোতে আশ্রয় নেয় তারা। এমন দৃশ্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পাখিপ্রেমীরা।
কাঞ্চনদিঘিপাড়া গ্রামের সবিতা রানী বলেন, পাখিগুলো এখানে বাসা বোনে, বাচ্চা ফোটায়। ছানারা ডানা মেলে উড়াল দেয়। কেউ এসে শিকার করতে চাইলে বা বিরক্ত করলে গ্রামের লোকজন ও প্রতিবেশীরা মিলে তাঁদের বাধা দেন। কয়েক বছর ধরে পাখিগুলো এখানে আশ্রয় নিয়েছে।
ওই গ্রামের রাহাত হোসেন বলেন, প্রতিবছর শীতের সময় এখানে সরালি, পানকৌড়ি, শামুকখোল, বালিহাঁসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসে।
পত্নীতলা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি সুমন কুমার বলেন, সারা বছরই এখানে দেশি প্রজাতির পাখি থাকে। আর শীত মৌসুমে আসে পরিযায়ী পাখি। দিঘিটি লিজ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করায় পাখিগুলো খুব একটা নিরাপদে থাকতে পারে না। সন্ধ্যায় আসে আবার দিনের বেলায় চলে যায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, কোনো পাখি আহত হলে তাঁরা সেগুলোর চিকিৎসাসেবা দেন। এ ছাড়া পাখি শিকার বা হত্যার ব্যাপারে সবসময় মানুষকে নিরুৎসাহিত করা হয়।
পত্নীতলার ইউএনও লিটন সরকার বলেন, পাখিদের থাকা নিয়ে কোনো সমস্যা হলে সহযোগিতা করা হবে।