মানিকগঞ্জের ঘিওরে দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে ১৭ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।এদিকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। এ থেকে রক্ষা পেতে ঘরবাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
গতকাল শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দেখা গেছে, পাঁচ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে। জানা গেছে, এ নিয়ে উপজেলা হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ১৭ রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১২ ও নারী পাঁচজন।
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের গ্রামগুলোয় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাবে গ্রামের লোকজন এ রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও হাসপাতালে কম যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বিপুল বালো জানান, ডেঙ্গু হলে সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। শরীরে তীব্র ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, অরুচি, ডায়রিয়া, চোখের পেছনে ব্যথা, গায়ে র্যাশ ওঠা বা লালচে দানা আসা ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার কোথাও মশা নিধনের কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেই। বাজারের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় এবং ময়লা-আবর্জনায় ভরাট থাকায় আতঙ্কে আছেন তাঁরা।
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত চিকিৎসাধীন জলিল মিয়া জানান, হঠাৎ করে কয়েক দিন ধরে রাতের বেলাতে প্রচণ্ড জ্বর ও শরীর ব্যথা অনুভব করেন। হাসপাতালে ভর্তির পর বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সুফিয়া আক্তার বলেন, কীভাবে আক্রান্ত হলাম বুঝতে পারছি না। তিন দিন ধরে প্রচণ্ড জ্বর, গা ব্যথা ও বমি রয়েছে। এখন একটু ভালো, চিকিৎসকেরা বলেছেন, দুই তিন দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ আহসান বলেন, ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা কামড়ানোর তিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে জ্বর শুরু হয়। তাই দুই-তিন দিনের বেশি জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। সেই সঙ্গে ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাওয়ার স্যালাইনও উপকারী বলে জানান এ চিকিৎসক। সুফিয়া আক্তার ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে ঘরবাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।