নওগাঁর নিয়ামতপুরে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়ায় এবং জমিতে পানি থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। ধান কাটতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। এবার বোরো ধান থেকে লাভের মুখ দেখতে না পারার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্গাচাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ২০ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ২২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। তবে যেসব নিচু জমিতে বৃষ্টির পানি জমে আছে, সেগুলো কেটে ঘরে তুলতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।
উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের রামকুড়া গ্রামের কৃষক রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিচু জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় কোনো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়তি পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলতে হচ্ছে।
রসুলপুর ইউনিয়নে ধান কাটতে আসা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি শ্রমিক মফিজুল জানান, এবার কালবৈশাখী ঝড়ে বেশির ভাগ জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন হিসেবে তাঁরা ৭০০ টাকা করে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
দামপুরা গ্রামের বর্গাচাষি জুলফিকার আলি বলেন, চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে রাসায়নিক সার ও সেচ মিলে খরচ পড়েছে ৭ হাজার টাকা। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে খরচ ৫ হাজার টাকা। জমির মালিককে দিতে হবে পাঁচ মণ ধান। সব মিলিয়ে প্রায় ১৭ হাজার টাকার ব্যাপার। অথচ বিঘায় উৎপাদন হবে ১৬-১৭ মণ। এতে বর্গাচাষিদের তেমন কিছুই থাকবে না।
এদিকে, আগামী ১২-১৩ তারিখে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ আঘাত হানতে পারে এমন আবহাওয়া বার্তায় কৃষকেরা দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে চাইলেও শ্রমিক সংকটে তা সম্ভব হচ্ছে না। আবার সুযোগ বুঝে কৃষি শ্রমিকেরা পারিশ্রমিক বেশি চাচ্ছেন বলে জানান কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমির আবদুল্লাহ মো. ওয়াহিদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় অশনি আঘাত আনতে পারে এ জন্য মাঠের ফসল ৭০-৮০ ভাগ পাকলেই কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি অফিসের সব কর্মকর্তাদের কৃষকের পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’