হোম > ছাপা সংস্করণ

‘বাবা বড়ই অভিমানী’

প্রতিনিধি, লালপুর (নাটোর) ও বাঘা (রাজশাহী)

‘বাবা বড়ই অভিমানী। একটুতেই রাগ করতেন। কিন্তু তাঁর রাগ বেশিক্ষণ স্থায়ী হতো না। শনিবার সকালে ফোন করলেও ধরেননি। পরে রমেন দা-কে দিয়ে ফোন ধরান। বাবার সঙ্গে শেষ কথাটিও হলো না।’ দরদি কণ্ঠের শিল্পী রেজাউল করিম সম্পর্কে এভাবে বলছিলেন তার মেয়ে রুখসানা খাতুন।

রেজাউলের অভাবের সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এর মধ্যেও তাঁর স্ত্রী ছাফিয়া স্বপ্ন দেখতেন, স্বামী এক দিন বড় গায়ক হয়ে নাম কুড়াবেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মানুষটা সারা 

দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতেন ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে। তারপরও হারমোনিয়াম নিয়ে বসে পড়তেন ঘরের কোণে। হারমোনিয়ামটা পরম যত্নে পরিষ্কার করতেন। মন চাইলে একটু গলাও সাধতেন। অনেক সময় হারমোনিয়ামে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তেন।’

দারিদ্র্য যাঁর কণ্ঠ থামাতে পারেনি, সেই রেজাউল কিনা থেমে গেলেন অভিমানে। আজকের পত্রিকার ফেসবুক ও ইউটিউব পেজে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া রেজাউল করিমের কণ্ঠে আর শোনা যাবে না মানবেন্দ্রর গান। গত শনিবার বিকালে নাটোরের লালপুরের একটি আমবাগানে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আব্দুলপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক হিরেন্দ্র নাথ বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর পেটের ওপর হালকা আঁচড় দেখা যায়। হয়তো গাছে উঠতে গিয়ে এটা হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আসল সত্য উদ্‌ঘাটন হবে বলে জানিয়েছেন লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকে রেজাউলের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে। বাদ আসর দিঘা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

শিল্পী রেজাউল করিমের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামে। তাঁকে চেনেন না, এমন মানুষ খুব কমই আছে দিঘায়। শুধু দিঘা কেন, নাটোরের লালপুরেও তিনি ছিলেন পরিচিত মুখ। শুক্রবার দুপুরেও লালপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গান করতে গিয়েছিলেন তিনি।

রেজাউল সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তাঁকে আমরা নিয়মিত সহযোগিতা করতাম চেয়ারম্যান শফিকের মাধ্যমে। সংসারে মোটামুটি সচ্ছলতা ফিরে এসেছিল। কেন যেন গত পরশু রেডিও বড়ালকে বলেছিলাম খোঁজ নিতে! তারা জানাল, তিনি দিঘার বাসায় নেই। লালপুর গেছেন গান করতে, ১৪ তারিখ ফিরবেন। আফসোসটা আমার থেকেই যাবে।’

দিঘা গ্রামের বাদক দলনেতা রমেন চন্দ্র দাস গত শুক্রবার লালপুর উপজেলার হাসেমপুর গ্রামে গুরুপদের ছেলের বিয়েতে বাদ্যযন্ত্র ও গানের দল নিয়ে যান। রেজাউল করিমও ছিলেন এই দলে। রমেন জানান, সন্ধ্যায় তাঁরা পৌঁছেন কনে কৃষ্ণরামপুর গ্রামের নিখিল কুমার সরকারের মেয়ে চৈতালী রানী সরকারের বাড়িতে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাসি বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার একপর্যায়ে ঘামতে থাকেন রেজাউল। তারপরও হাত-মুখ ধুয়ে আরও দুটি গান করেন। তারপর শরীর খারাপ লাগার কথা বললে পাশের একটি ঘরে ফ্যানের নিচে শুইয়ে দিয়ে আসেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে খাওয়ার সময় তাঁকে (রেজাউল) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বেলা ৩টার দিকে বিয়েবাড়ির পেছনের আমবাগানে একটি আমগাছের ডালের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় তাঁর মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।

রমেশ চন্দ্র দাস বলেন, রেজাউল করিমের গাওয়া জীবনের শেষ গান ছিল: ‘একটা চিঠি দিলাম লিখে/মনের কথায় আজ তোমাকে/দেখো যেন কেউ দ্যাখে না...।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ