হোম > ছাপা সংস্করণ

শঙ্কার মধ্যেই চলছে ধান কাটা

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ

ফসল রক্ষা বাঁধ কখন ভেঙে যায়, কখন হাওরে পানি ঢুকে পড়ে, কখন শিলাবৃষ্টি আবার কখন বজ্রপাত শুরু হবে—এত সব শঙ্কার মধ্যে হাওরাঞ্চলে ধান কাটা চলছে। ১৫ দিন ধরে পাহাড়ি ঢলের কারণে ফসল রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেন কেউ ধাক্কা দিলেই ভেঙে যাবে বাঁধ। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও স্থানীয় কৃষকদের রাতদিন বাঁধে সময় কেটেছে।

এখনো জেলা হাওরের অর্ধশতাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বাঁধে পাহারা দিতে হচ্ছে। এত কিছুর মাঝে তুমুল ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন হাওরের কৃষকেরা। এখন বাঁধ ছেড়ে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বাড়ির ছোট-বড় সবাই।

এ মুহূর্তে সোনালি স্বপ্ন গোলায় ভরতে মরিয়া হয়ে খেতে ও খলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। ডানে-বামে তাকানোর যেন সুযোগ নেই—এমনই ব্যস্ততা তাঁদের। কিষান-কিষানি সমানতালে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ফসল ঘরে তোলার কাজে। ছেলে, বুড়ো, শিক্ষার্থী—কেউই ঘরে নেই, সবাই ব্যস্ত হাওরে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জে প্রায় দেড় শ হাওরে ২ লাখ ২২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত ধান কাটা হয়েছে ৫৬ শতাংশ। ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬১ হেক্টর। জেলাজুড়ে ৫৭৫টি  কম্বাইন হারভেস্টার, ১০৮টি রিপার মেশিন এবং ২ লাখ ২৮ হাজার ধান কাটা শ্রমিক কাজ করছেন। ঢলে ১৮ হাওর ডুবে ৫ হাজার ৭৬৫ হেক্টর ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে সরেজমিনে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ডেকার হাওরের বাহাদুরপুর, নীলপুর ও গোবিন্দপুর গ্রামের দিকে দেখা যায়, ধান তোলার উৎসব চলছে। ডেকার হাওরের আস্তমা বাঁধটি নদীর পানির চাপে খুবই ঝুঁকির মধ্যে আছে, সেটাও মনে হয় ভুলতে বসেছে অনেকেই। আবার অনেকে ঝড়, বাঁধ—এসব মাথায় নিয়েই ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত।

লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল মোত্তালেব বলেন, ‘এখন আর বান্ধের (বাঁধ) কথা 
চিন্তা কইরা লাভ হইতো না। আবহাওয়া ভালা আছে দুই দিন ধইরা ওখন যা পারি জমির ধান কাইটা 
ঘরো তুলমু।’

দুদিন ধরে বৈশাখ মাসেই চৈত্রের দাবদাহ চলছে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে। তাতেই স্বস্তি ফিরেছে কৃষকদের মাঝে। তবে ব্রি-২৮ জাতের ধান পাকলেও ব্রি-২৯ জাতের ধান পাকতে আরও ১০-১২ দিন লাগতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম 
বলেন, পুরো জেলার হাওর এলাকার ধান শতভাগ কাটা শেষ হতে ৫ মে পর্যন্ত সময় লাগবে। ২৫ মের মধ্যে ননহাওরের ধান কাটা শেষ হবে।

বাঁধ ভেঙে ফসলহানিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে—এমন প্রশ্নের 
জবাবে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের মতো বড় হাওরের তুলনায় যে পরিমাণ ফসল পানিতে তলিয়েছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।

তবে কৃষি বিভাগের তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়। তিনি বলেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের হিসাব অনুযায়ী জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫-৪০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু ধান কাটা হয়েছে, তা-ও আধা পাকা অবস্থায়। কৃষকেরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জের হাওরে এখনো ধান পাকার অনেক দেরি আছে। ৫ মে পর্যন্ত কৃষি বিভাগ যে তথ্য দিয়েছে, এই সময়ের ভেতর হাওরের ধান কেটে ঘরে তোলা সম্ভব হবে না।

আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, মেঘালয়ে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে তা খুব কম। এখন আপাতত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ