আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে পালপাড়ার কুমারদের জীবন-জীবিকা।
মৃৎশিল্পীদের আর প্রচলিত পদ্ধতিতে চাক ঘোরাতে হয় না। এখন আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করছেন তারা মৃৎশিল্পের বিভিন্ন উপকরণ।
তাঁরা মৃৎশিল্পের মালামাল তৈরি করছেন বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে। ইলেকট্রিক মর্টারের সাহায্যেই ঘুরছে পাল সম্প্রদায়ের মাটির জিনিসপত্র তৈরির চাক। এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন ব্যবহার করে মৃৎশিল্পের কারিগরদের শারীরিক শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে। তারা স্বল্প সময় এবং স্বল্প খরচে অধিক পরিমাণে মাটির জিনিসপত্র উৎপাদন করতে পারছেন।
নশরতপুর এস এম মজিবর রহমান পেশায় তিনি একজন ইলেকট্রিশিয়ান। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে পাল সম্প্রদায়ের মানুষদের কষ্ট লাঘব করা যায়। এ ভাবনা থেকেই তিনি উদ্ভাবন করেন কুমারদের জন্য বৈদ্যুতিক চাক মেশিন। তার এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিনটি এসি বৈদ্যুতিক মোটরের পরিবর্তে এসি থেকে ডিসিতে রূপান্তরিত হয়ে স্বল্প বিদ্যুৎ খরচে ডিসি মোটর ব্যবহার হচ্ছে এবং এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিনটি ঘুরছে। তিনি জানান, এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিনটি দেশের সবখানে ছড়িয়ে দিতে পারলে মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরদের সময় ও শ্রম সাশ্রয় হবে এবং ৩ গুণ উৎপাদন বেশি হবে।
মৃৎশিল্পী নিরঞ্জন পাল (৩৮) জানান, ‘ এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন দিয়ে আমরা সারা দিন ৭০০ থেকে ১ হাজার মাটির ফুলের টব বা হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করতে পারছি।’
শ্যামল চন্দ্র পাল (৫০) জানান, এ মেশিন ব্যবহারের ফলে সময় এবং শ্রমও সাশ্রয় হচ্ছে। প্রতিবন্ধী রূপ কুমার পাল (৩০) এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন ব্যবহার করে মাটির বিভিন্ন জিনিসপত্র অনায়াসে তৈরি করতে পারছেন।
বৈদ্যুতিক চাক মেশিন উদ্ভাবক মজিবর রহমান বলেন, ‘আমি অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে বেশি দূর অগ্রসর হতে পারছি না। মেশিনটি কীভাবে আরও উন্নত করা যায় চিন্তা-ভাবনা করছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সাহায্য-সহযোগিতা পেলে এ মেশিন বৃহৎ পরিসরে বাজারজাত করতে সক্ষম হব।’