১৯৯৮ থেকে ২০১৮—গত ২২ বছরে বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল দল ফ্রান্স। এ সময়ে দুইবার চ্যাম্পিয়ন এবং একবার রানার্সআপ হয়েছে ফরাসিরা। বর্তমান চ্যাম্পিয়নও তারা। এবারও লা ব্লুজদের চোখে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। স্বপ্নপূরণের পথে আজ তাদের বাধা হচ্ছে পোল্যান্ড।
১৯৬২ বিশ্বকাপের পর টানা দুইবার বিশ্বকাপ জিততে পারেনি কোনো দল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের জন্যও এটি এক মনস্তাত্ত্বিক বাধা। ইতিহাস বদলে দেওয়ার লক্ষ্যে ফ্রান্স আজ মাঠে নামছে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে।
কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে ফরাসিদের প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর আর দ্বিতীয় রাউন্ড টপকাতে পারেনি। ৩৬ বছর পর শেষ ষোলোর বাধা পেরোনোই বড় চ্যালেঞ্জ পোলিশদের সামনে। প্রতিপক্ষ যখন ফ্রান্স, তখন কাজটি এভারেস্ট জয় করার মতোই কঠিন।
তবু দলটিতে রবার্তো লেভানডফস্কির মতো বিশ্বসেরা একজন ফরোয়ার্ড আছেন। যিনি একাই স্কিল ও গতি দিয়ে বদলে দিতে পারেন ম্যাচের ফল। পোল্যান্ডকে আটকাতে হলে সিজিল মিশিনিউইচের এই ‘ট্রাম্পকার্ড’কে বোতলবন্দী করতে হবে দিদিয়ের দেশমের শিষ্যদের।
গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দেশমও লেভানডফস্কিকে হুমকিই মানলেন, ‘আমাদের অবশ্যই তার (লেভা) প্রভাব কমাতে হবে।তার কাছে যত কম বল থাকবে, সে তত কম বিপজ্জনক হবে। তার বুদ্ধিমত্তা, দক্ষতা, সে শরীরকে খুব ভালোভাবে ব্যবহার করে। গ্রুপ পর্বে সে খুব বেশি বল পায়নি, কিন্তু তার কাছে অল্প বল এলেও বিপজ্জনক হতে পারে।’
দেশম অবশ্য লেভাকে নিয়েই শুধু ভাবতে রাজি নন, তাঁর ছক পুরো পোল্যান্ডকে নিয়েই, ‘আমরা শুধু তাঁর দিকে নজর রাখতে চাচ্ছি না, তবে বিপজ্জনক হতে পারে এমন ছকে সে আছে।’
পোল্যান্ডের কোচ সেসওয়াফ মিখনিয়েভিৎস আত্মবিশ্বাসী সুরে বলেছেন, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে তাঁর দল কাতারে বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের দিকে এগিয়ে যাবে। পোলিশ কোচ মনে করেন, ফ্রান্সকে হারাতে পারলে চ্যাম্পিয়নই হতে পারে তাঁর দল।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মিখনিয়েভিৎস বললেন, ‘যদি ফ্রান্সের বিপক্ষে জিতি, তাহলে আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও হতে পারি।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘আগেই ফ্রান্সকে জয়ের নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। আপনি জিতবেন কিংবা বাড়ি যাবেন, সবকিছুর জন্য খেলতে হবে।আমরা বিশ্বাস করি, আমরা একটি ভালো খেলা খেলব। তবে এটাও জানি, এটি আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশমের সমীহতে রয়েছেন লেভানডফস্কি। কিন্তু পোল্যান্ডকে তছনছ করে দিতে ফ্রান্সেরও আছেন একজন ‘কিলার’–কিলিয়ান এমবাপ্পে। ইতিমধ্যে প্রথম রাউন্ডে ৩টি গোলও করেছেন পিএসজি স্ট্রাইকার।
পোল্যান্ডের ফরোয়ার্ড আরকাদিয়ুশ মিলিক বলেই দিয়েছেন, কৌশল করে এমবাপ্পেকে আটকানো যাবে না। তাঁর মতে, এমবাপ্পে যে গতিময় ফুটবল খেলেন, তাঁকে থামাতে নাকি ‘স্কুটার’ লাগবে!
বিশ্বকাপে একবারই সাক্ষাৎ হয়েছে ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের। ১৯৮২ আসরের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছিল—এই পরিসংখ্যানেই অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারে পোলিশরা।