হোম > ছাপা সংস্করণ

স্মৃতিচিহ্ন হারিয়ে যাচ্ছে

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর

অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে মাদারীপুরের ১৫টি গণকবর। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে মুক্তিযুদ্ধের এই স্মৃতি চিহ্নগুলো। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে ২০১৩ সালে মাদারীপুরের ১০টি বদ্ধভূমি উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্য কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সমীক্ষা শেষে ২০১৪ সালে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠায় মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগ। এর প্রেক্ষিতে ১০ টির মধ্যে ৪টি বদ্ধভূমির ওপর স্মৃতিসৌধ নির্মাণের অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও নানা জটিলতায় গণপূর্ত বিভাগ স্মৃতিসৌধ নির্মাণে কাজ শুরু করতে পারেনি। তবে এই ১০টি বদ্ধভূমি ছাড়াও আরও অন্তত ৫টি স্থানকে চিহ্নিত করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

সরেজমিন অনুসন্ধান, মুক্তিযোদ্ধা, এলাকাবাসী ও শহীদ পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলায় ৭টি এবং রাজৈর উপজেলায় ৮টি গণকবর বা বদ্ধভূমি রয়েছে।

এর মধ্যে সদর উপজেলার কুকরাইল মৌজার এ আর হাওলাদার জুট মিলের ভেতরে রয়েছে জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি। এখানে প্রায় ৭০০ নর-নারী ও মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে নির্যাতনের পর হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাদারীপুর সদর উপজেলার এ আর হাওলাদার জুট মিলের গণকবর ছাড়া আরও যে ছয়টি গণকবর রয়েছে সেগুলো হচ্ছে, কেন্দুয়া ইউনিয়নের পূর্ব কলাগাছিয়া সুষেন হালদারের বাড়ির পুকুর পাড় বধ্যভূমি, একই ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের তারাপদ শিকারির বাড়ির পুকুর পাড় বধ্যভূমি, দুধখালী ইউনিয়নের মিঠাপুর শিকদার বাড়ি বধ্যভূমি, একই ইউনিয়নের মিঠাপুর গোপী ঠাকুরের বাড়ির পেছনে পুকুরের উত্তর পাশে বধ্যভূমি, কেন্দুয়া ইউনিয়নের চৌহদ্দি হাটখোলা বধ্যভূমি ও মাদারীপুর পৌরসভার কুলপদ্দির সাবেক সরকারি শিশু সদন ভবনের পূর্ব পাশের বধ্যভূমি।

রাজৈর উপজেলার আটটি গণকবর হচ্ছে, বাজিতপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের কেষ্ট বৈদ্যের বাড়ির পুকুর পাড় বদ্ধভূমি, আমগ্রাম ইউনিয়নের পাখুল্লা গ্রামের রাসু গাটিয়ার বাড়ির পুকুর পাড় বধ্যভূমি, কদমবাড়ি ইউনিয়নের গণেশ পাগলের সেবা আশ্রমের পূর্ব পাশে পুকুর পাড় বধ্যভূমি, খালিয়া ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের আলেক ফকিরের বাঁশঝাড়সংলগ্ন ৩ খালের সংযোগ স্থানের বধ্যভূমি, একই ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের সিদ্দিক মাতুব্বরের বাড়ির দক্ষিণ পূর্ব কোণের বধ্যভূমি, শচীন বারিকদারের বাড়ির দক্ষিণ পাশে খালের পাড় বধ্যভূমি, ডা. রাসু বারিকদারের বাড়ির পাশে বাগানের ভেতরের খালপাড় বধ্যভূমি ও ছাতিয়ানবাড়ি গ্রামের পূর্ণ চন্দ্র বৈদ্য বাড়ির উত্তর পাড় পুকুরের মধ্যে বধ্যভূমি।

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার ৮টি বধ্যভূমিতে ১২৭ জন শহীদের কবর দেহাবশেষ রয়েছে। স্থানীয় শহীদ পরিবারের সদস্য এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ২০০৯ সালের ১৪ এপ্রিল সেনদিয়া গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেন। স্মৃতিস্তম্ভে ১২৬ শহীদের নাম সংবলিত একটি শিলালিপি লাগানো হয়েছে। গণহত্যার সময় পাকিস্তানি সেনা ও তাঁদের সহযোগীরা অমূল্য কণ্ডুর ঘরে আগুন দেয়। এতে তাঁর মা পুড়ে মারা যান। কিন্তুর তাঁর নাম না জানার কারণে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে তার নাম খোদাই করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে তৎকালীন খলিল বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান বলেন, মাদারীপুরে সবচে বড় দুটো গণকবর হলো, এ আর জুট মিলের মাঠ আর কেন্দুয়ার সুষেন হালদারের বাড়ির পুকুর পাড়। এ ছাড়া আরও প্রায় ১৩টি ছোট-বড় গণকবর রয়েছে। কিন্তু এসব স্মৃতিচিহ্ন মুছে যেতে বসেছে।

মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম খান বলেন, ‘৪ টির মধ্যে কেন্দুয়া ও মিঠাপুরের কাজ দ্রুতই শুরু করতে পারব। জুট মিলেরটাও তালিকায় আছে। যেহেতু জায়গাটা নিষ্কণ্টক না, সেহেতু ওখানে কাজ শুরু করতে পারছি না।’

জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘ইতিমধ্যে দুটি গণকবরের স্থান পরিদর্শন করেছি। আশা করি, জটিলতা কাটিয়ে খুব শিগগিরই কাজ শুরু করা যাবে। এ ছাড়া বাকি যেসব গণকবর আছে, সেগুলোর বিষয়ে নির্দেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করব।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ