চট্টগ্রামে একটি কারখানায় ইটিপি স্থাপনের জন্য একাধিকবার পরিবেশ অধিদপ্তরের নোটিশ পেয়েও তাতে গা করেনি কারখানার মালিক। শেষমেশ কারখানাটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
গতকাল রোববার পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে নগরের নাছিরাবাদ বিসিক শিল্পনগরী এলাকার মক্কা ওয়াশিং ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামের কারখানাটি সিলগালা করে দেয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগে কারখানাটির গ্যাস, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনের পাশাপাশি কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বিটিসিএলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের উপপরিচালক মিয়া মাহামুদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইটিপি স্থাপনের জন্য বারবার সতর্ক ও সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার পরও তিনি তাতে তোয়াক্কা করেননি। পরে আমরা বাধ্য হয়ে কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছি।’
মিয়া মাহামুদুল হক জানান, গত বছর ২৯ মার্চ কারখানাটি পরিদর্শন করে সেখানে কোনো ইটিপি স্থাপন দেখা যায়নি। এতে কারখানাটি থেকে নির্গত বিষাক্ত তরল বর্জ্য পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
ওই বছরই ৬ জুন পরিবেশ অধিদপ্তর শুনানি করে কারখানাটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। পাশাপাশি আগামী সাত দিনের মধ্যে কারখানায় ইটিপি স্থাপন করে এর প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
পরে কারখানার মালিক ১৪ জুন ইটিপি স্থাপনের জন্য দুই মাসের সময় চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেন। কিন্তু এই সময়েও কারখানায় ইটিপি স্থাপন করা হয়নি।
গত বছরের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে কারখানার মালিককে তিন দফা নোটিশ দেওয়া হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতে তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। গত ১৮ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তর পুনরায় কারখানায় সরেজমিন পরিদর্শনে যায়। তাতে কারখানায় কোনো ইটিপি স্থাপন দেখা যায়নি।
কারখানাটির অনুকূলে কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্রও নেই বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মিয়া মাহামুদুল হক বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রামে ৯২ শতাংশের ওপরে কারখানায় ইটিপি স্থাপন হয়েছে। কিছু মালিক এখনো ইটিপি স্থাপন করেননি। তাঁদের বিভিন্ন সময় জরিমানা করা হয়েছে এবং ইটিপি স্থাপনে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ইটিপি স্থাপনে ব্যয় ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ হওয়ায় সাধারণত কারখানার মালিকেরা ইটিপি স্থাপনে অনাগ্রহ দেখিয়ে থাকেন।