প্রতিবন্ধী শিউলী খাতুন। জন্মের পর বাবাকে দেখেনি কোনো দিন। মেয়ে সন্তান জন্ম হওয়া শিউলীর মাকে তালাক দিয়ে স্বামী। বাধ্য হয়ে মেয়েকে নিয়ে কেশবপুরের চাঁদড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন তাঁর মা রোকেয়া বেগম। একদিন নানা-নানি শিউলীকে নিজেদের কাছে রেখে তাঁর মাকে বিয়ে দেন। বাবার পর মা–ও চলে গেলেন। এরপর যাদের আশ্রয়ে ছিলেন সেই নানা-নানিও মারা গেছেন। এখন তাঁর আপন বলতে কেউ আর অবশিষ্ট থাকল না।
বর্তমানে অন্যের জমিতে খুপরি ঘর বেঁধে বাস করা তাঁর এক খালাতো ভাইয়ের সংসারে কোনোমতে মাথা গুঁজে ঠাঁই হয়েছে শিউলীর। তাঁর আক্ষেপ, তিনি যদি সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর পেতেন তাহলে বোঝা হয়ে বাঁচতে হতো না।
জীবনসংগ্রামের মধ্যেও অনেক কষ্টে পড়ালেখা চালিয়ে আসেন শিউলী। ২০০৪ সালে চাঁদড়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেছেন শিউলী খাতুন। সংগ্রাম করে চলেছেন বেঁচে থাকার জন্য। ঘৃণায় বাবাকে দেখতে মনে চায়নি কোনো দিন। শুনেছেন তাঁর বাবা রেজওয়ানের বাড়ি সাতক্ষীরার কোনো এক গ্রামে।
গত বুধবার সুবোধ মিত্র মেমোরিয়াল অটিজম ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে আসলে কথা হয় শিউলী খাতুনের সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান, তাঁর হতদরিদ্র নানা হেরমত আলী গাজী ছিলেন উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের চাঁদড়া গ্রামের বাসিন্দা।
শিউলী খাতুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটা ঘর পেলে আর ভেসে বেড়ানো লাগতো না।