জরাজীর্ণ ভবন, ওষুধস্বল্পতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের বেশির ভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক। এ কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ক্লিনিকগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ ও ওষুধের বরাদ্দ বৃদ্ধি করে কেন্দ্রগুলো নজরদারিতে রাখা হোক।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনাসেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা। উপজেলায় ২১টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ১৭টি ক্লিনিক থেকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনের মধ্যে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ৩টি, মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি ও নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ ২টি ক্লিনিকসহ মোট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ১০টি ক্লিনিক। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী (সিএইচসিপি) নেই ৪টি ক্লিনিকে।
বেশকিছু ক্লিনিক ঘুরে জানা গেছে, বেশির ভাগ কেন্দ্র অবকাঠামো সমস্যা, শৌচাগার, পানি, বিদ্যুৎসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন মেরামত না করায় ভবন জরাজীর্ণ। কিছু ক্লিনিকে সিএইচসিপি নেই। কিছু ক্লিনিকে সিএইচসিপি থাকলেও তাঁরা ঠিক সময়ে আসেন না বা এলেও তাড়াতাড়ি চলে যান। উছমানপুর, কাপাসাটিয়া, মহরউদ্দিন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। এ কারণে এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। আশ্রয়ণ প্রকল্পের কমিউনিটি ক্লিনিক থাকে আধা বন্ধ, আধা চালু। এ ক্লিনিকে সপ্তাহে এক দিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসে চিকিৎসাসেবা দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএইচসিপি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জনসাধারণকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওমর খসরু দৈনিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দরিদ্র মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে সিএইচসিপি না থাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাপাসাটিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে বেশি সমস্যা হচ্ছে। আমরা এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে ২৭ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করে থাকি। এ ওষুধ দিয়েই তাঁরা জনসাধারণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি ভ্যাকসিনের সেবাও দেওয়া হচ্ছে এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে।