হোম > ছাপা সংস্করণ

পানি জীবন, পানিতেই জীবিকা দুই নারীর

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পানি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন অসহায় আছিয়া বেগম ও আসমা বেগম নামে দুই নারী। তাঁদের একজন বিধবা আর অন্যজন স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন। দুই নারীরই মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকলেও ভিক্ষাবৃত্তিতে নামেননি তাঁরা।

জীবনযুদ্ধে বেছে নিয়েছেন পানি বিক্রি করার পেশা। আছিয়া বেগম (৪০) ঝিনাইগাতী উপজেলার বন্দভাটপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের স্ত্রী। আর স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন আসমা বেগমের (৪২) জায়গা-জমি না থাকায় বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে ঝিনাইগাতী সদরে অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

জানা গেছে, সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা ঝিনাইগাতী বাজার এলাকায় মাটির নিচে পাথর থাকায় সব জায়গায় সাধারণ নলকূপ বসানো যায় না। আবার অনেক খরচ করে গভীর নলকূপ বসালেও সেই পানিতে থাকে আয়রন। তাই এ বাজারে সারা বছরই পানির সংকট থাকে। বিশেষ করে বাজারের বিভিন্ন দোকানে পানির সংকট অনেক বেশি। আর এসব দোকানে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্যানগাড়ি দিয়ে পানি এনে সকাল-বিকেল সরবরাহ করেন আছিয়া বেগম ও আসমা বেগম। পানি সরবরাহ করে দৈনিক যা পান তা দিয়েই চলে ওই দুই অসহায় নারীর সংসার। বাজারের গরুহাটি মসজিদের সাবমার্সিবল পাম্প থেকে পানি নেন তাঁরা। এ জন্য মসজিদের তহবিলে মাসে মাসে কিছু টাকাও দেন।

আছিয়া বেগম বলেন, ‘তাঁর স্বামী করিম একসময় নাপিতের কাজ করতেন। পরবর্তীতে তিনি চোখের সমস্যায় অন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তখন তাদের সংসারের উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। জমি-জমা বলতে মাত্র পাঁচ শতাংশের একটি বাড়িভিটা আছে তাঁদের। ওইসময় থেকে আছিয়া অন্যের কাছে হাত না পেতে ঝিনাইগাতী বাজারে পানি বিক্রি শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘পানি বিক্রি করে যা পাইতাম, তাই দিয়েই আমার তিন সন্তান আর অন্ধ স্বামীসহ পাঁচজনের সংসার চলতো। গত তিন বছর আগে আমার স্বামী মারা যাওয়ায় এখন চার জনের সংসার আমার। আমি আর আসমা মিলে প্রায় ২০ বছর ধইরা পানি টাইনা বিক্রি করে সংসার চালাইতাছি। একজনে ভ্যানগাড়ি টানি, আরেকজন পেছন থেকে ধাক্কা দেই। বাজারের বিভিন্ন দোকানে পানি দিয়া দৈনিক পাঁচ/ছয়শ টাকা পাই। পরে এই টাকা দুইজনে সমান ভাগ কইরা নেই। কতজন ছবি তুইলা নিলো, কিন্তু আমগোরে কেউ কোনো কিছু দিলো না। শুনলাম আমার বলে বিধবা কার্ড অইছে।’

এদিকে আরেক অসহায় নারী আসমা বেগম জানান, ‘তিনি আগে শেরপুর শহরের তাতালপুরে থাকতেন। কাজ করতেন ধানের চাতালে। সেখানেই কিশোরগঞ্জ জেলার নূর ইসলাম নামে এক শ্রমিকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিলো তাঁর। তিন সন্তান হওয়ার পর আসমাকে ফেলে নূর ইসলাম তাঁর গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। সে থেকেই তিনি স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন।  জীবিকার তাগিদে ধানের চাতাল ও পরে কৃষি শ্রমিক হিসেবেও কাজ করেছেন। পরে বাবা-মাসহ ঝিনাইগাতী চলে এসে অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তিনি আরও বলেন, ‘২০-২৫ বছর ধরে ঝিনাইগাতীই থাহি। এনোই ভোট দেই। আমগোরে কোনো জায়গা-জমি নাই। আছিয়ার সঙ্গে পানি বেইচা অনেক কষ্টে সংসার চালাই। কত মানুষ ঘর পাইলো, কিন্তু আমরা পাইলাম না।’

ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি। পরবর্তীতে তাঁদের ঘরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতনদের জানাবো।’

এ ব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, আমরা এদেরকে পরবর্তী সময়ে সময়ে সরকারি ঘর ও জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ