হোম > ছাপা সংস্করণ

রেজিস্ট্রার ভবনের আতঙ্ক ‘লাঞ্চের পরে আসেন’

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাবি 

সকাল থেকে টানা ক্লাস করেছেন আবির (ছদ্মনাম)। পঞ্চম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাটা দিতে পারবেন কি না, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা। অসুস্থতার কারণে দ্বিতীয় বর্ষের দুটি কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। নিয়ম অনুযায়ী বিশেষ পরীক্ষার অনুমতি পেলেও কাগজপত্র ঠিকঠাক করতে বিভাগ, রেজিস্ট্রার ভবন, হল অফিস, ব্যাংকে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত। আগের পরীক্ষার ফলটা যোগ হলেই কেবল তৃতীয় বর্ষে ভর্তি হতে পারবেন, দিতে পারবেন পরীক্ষা। না হলে একটা বছর শেষ হয়ে যাবে তাঁর।

এমন নানা দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে দুপুর ১২টায় হাজির হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রেজিস্ট্রার ভবনে। নির্দিষ্ট রুমে গিয়ে দেখেন, কর্মচারীরা সবাই খোশগল্পে মশগুল। আবির ভাবলেন, আজ হয়তো কাজের চাপ কম। তাই তার কাজগুলো দ্রুত হবে। খোঁজ নিয়ে তাঁর ফাইলটা যে টেবিলে রাখা, সেখানের কর্মকর্তাকে সমস্যার কথা জানান আবির। ওই কর্মকর্তা তাঁকে বলেন, ‘লাঞ্চের পরে আসেন।’

লাঞ্চের পর দুপুর ২টায় ক্লাস থাকায় বেলা তিনটার একটু পর গেলে সেই কর্মকর্তা আবিরকে পরদিন আসতে বলেন। অথচ ঢাবি রেজিস্ট্রার ভবনে বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত লাঞ্চের বিরতি।

সরেজমিন একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এমন ভোগান্তির কথা জানা গেছে। ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর এক ছাত্র বলেন, শিক্ষার্থীরা যখনই কোনো কাজের জন্য যান, ওই ভবনের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী খারাপ আচরণ করেন। তা ছাড়া, দুপুর ১২টার পরে কোনো কাজের জন্য গেলেই খাবারের বাহানা দিয়ে বিকেলের আগে কাজে হাত দেন না। এমনকি সামান্য কাজেও তিন-চার দিন পর্যন্ত দেরি করেন।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘সাধারণ প্রত্যয়নপত্র নিতে চাইলে ৪০০ টাকা আর জরুরি ভিত্তিতে নিলে ৯০০ টাকা নেওয়া হয়, যা আমাদের জন্য বড় চাপ।’ আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘১২৪, ৩০৫ ও ৩০৮ নম্বর কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি খারাপ আচরণ করেন। এদের সঙ্গে কথা বললে মনে হয়, এরা রাজা আর আমরা প্রজা।’

তা ছাড়া, অনলাইনে যেটুকু কাজ, তা করতে গেলে প্রায়ই সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়। কষ্ট করে সেই কাজ শেষ করার পর শুরু হয় ‘ম্যারাথন’। নাহ! এটা কোনো দৌড় খেলার প্রতিযোগিতা নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগ, রেজিস্ট্রার ভবন, হল অফিস, ব্যাংক ইত্যাদি জায়গায় ঘুরে ঘুরে শিক্ষার্থীদের নানা একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজের যে লম্বা পদ্ধতি, সেটাকেই একরকমের ম্যারাথন বলা যায়। যেখানে নানা কর্মযজ্ঞে হাঁপিয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের দাবি, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব কাজের প্রক্রিয়া পরিপূর্ণভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে করা হোক। এতে হয়রানি কমবে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভর্তির প্রাথমিক কার্যক্রম অনলাইনে হলেও অফলাইনে দুই হাত লম্বা এক বিশাল ফরম পূরণের মধ্য দিয়েই আসলে কাজ শুরু হয়। সেমিস্টার ফাইনাল ও বাৎসরিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ, সেমিস্টার ফি জমা, বৃত্তির কাজসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়—এমন লম্বা ফরম পূরণ করেই।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, বিভাগ থেকে প্রথমে ফরম নিয়ে তা পূরণ করে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরপর সেই কাগজে আবাসিক হলের প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে হয়। হল থেকে স্বাক্ষর নিয়ে আবার ছুটতে হয় ব্যাংকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরাও চাই সব কাজ প্রযুক্তির মাধ্যমে হোক। কিন্তু আমাদের তো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এসব নিয়ে অনীহা আছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার সরকার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সকল কার্যক্রমের আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া চলমান। হঠাৎ করে চাইলেই তো এটা সম্ভব নয়। ধীরে ধীরে এসব সমাধান হবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ