লাক্কাতুরা—সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রধান ফটক। সেখানেই বিপিএলের টিকিট বিক্রির দুই কাউন্টারের একটি। একটু সামনে এগিয়ে গেলে সারি সারি চা-বাগান। কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেয়ে এখানেই রীতিমতো ছবি তোলার প্রতিযোগিতা চলছে। এই মুহূর্তে সিলেটবাসীর উৎসবের মূল কেন্দ্র বিপিএলকেই বলা যায়।
সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা সাজিয়ে বসে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম বারবার প্রশংসিত হলেও এখানে তুলনামূলক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কমই হয়েছে। প্রতিবছর বিপিএলই তাই দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের দেখার সবচেয়ে বড় উপলক্ষ হয়ে এসেছে সিলেটের মানুষের কাছে।
এবার অবশ্য যতটা না দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার, তার চেয়ে সিলেটবাসীর আগ্রহের কেন্দ্রে সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি। অথচ অতীতে সিলেট দলকে সেভাবে ‘আপন’ করতে পারেনি তারা। কারণও আছে। ঘন ঘন নাম বদল, মাঠে ও মাঠের বাইরে নানা বিতর্কে বারবার এসেছে সিলেটের নাম। দু-একবার নয়, সবচেয়ে বেশি—ছয়বার নাম পরিবর্তন হয়েছে তাদের। মাঠের পারফরম্যান্সে অবশ্য বেশির ভাগ সময়ই তারা থেকেছে পেছনের বেঞ্চে। সেই সিলেটকেই এবার আপন করে নিয়েছে সিলেটবাসী। তারা নিজেদের দল নিয়ে অনেক খুশি।
আজ রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে সিলেটের স্ট্রাইকার্স ম্যাচের টিকিট কিনতে এসেছেন এমসি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র জামিল হাসান চৌধুরী। টিকিট তিনি পাননি। টিকিট নিয়ে হতাশা থাকলেও সিলেট নিয়ে তিনি খুশি, ‘সিলেটি হিসেবে আগের দলগুলো যখন অংশগ্রহণ করত, পরিচয় দিতেও লজ্জা লাগত! সিলেটের সব সময়ই নাজেহাল অবস্থা থাকত। এবার বুক ফুলিয়ে বলতে পারি—আমরা সিলেটি। মাশরাফি বিন মুর্তজা আমাদের অধিনায়ক, তাঁর হাত ধরে সিলেট যেমন খেলছে, অনেক খুশি। আমাদের সিলেটের খেলোয়াড়ও আছে—জাকির, সাকিব, রাজা ভাইয়েরা ভালো খেলছে।’ শুধু জাকির-রাজাই নন, দলের প্রধান কোচ রাজিন সালেহও তো সিলেটেরই মানুষ।
সিলেট কক্ষপথে ফিরেছে মাশরাফির সফল নেতৃত্বে। এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচের ছয়টিতে জিতে শীর্ষে আছে সিলেট। মাশরাফির মুখে কিছুটা তৃপ্তির আভা সিলেটকে নিয়ে, ‘সিলেটের দর্শকেরা লম্বা সময় তাদের দলকে যেভাবে চাচ্ছিল, এবার হয়তো এখন পর্যন্ত সেটা পেয়েছে। এটা দলের জন্য যেমন আনন্দের, দর্শকদের জন্যও। আমরাও চাইব প্রতিশ্রুতি মাঠেও বাস্তবায়ন করে দেখাতে।’