যশোর অভয়নগরের মেয়ে সুমি খাতুন হত্যার দায়ে স্বামী সোহান মোল্যাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক আশরাফ উদ্দিন গত সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। আসামি সোহান মোল্যা ফুলতলা উপজেলার ডাউনকোনা এলাকার বাবুল মোল্যার ছেলে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম ইলিয়াস খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অভয়নগরের কোটা পশ্চিমপাড়া এলাকার মেয়ে সুমির সঙ্গে খুলনার ফুলতলা উপজেলার সোহানের বিয়ে হয়। এর ৬ মাস আগে সুমির সঙ্গে তাঁর ফুপাতো ভাই মিন্টুর বিয়ে হয়। কিন্তু পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় তাঁদের সে সংসার ভেঙে যায়। দ্বিতীয় বিয়ের পর সুমি আগের স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত মোবাইলে কথা বলতেন। যা নিয়ে তাঁদের দাম্পত্য জীবনে প্রায় কলহ লেগে থাকত।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ মার্চ সুমি তাঁর ছোট ভাই সুমন শেখের সঙ্গে বাবার বাড়ি চলে আসেন। এর ৮ দিন পর নিহতের শাশুড়ি ফোন করে বাড়ি চলে আসতে বললে বড় ভাই সুজন শেখকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে আসে সুমি। ওই দিন রাতে সুমি মোবাইল ফোনে অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা অবস্থায় সোহান মোল্যার হাতে ধরা পড়েন। জিজ্ঞাসা করা মাত্র সুমি তাঁকে মারতে উদ্ধত হন।
উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সোহান মোল্যা তাঁর গলা টিপে ধরেন। জ্ঞান হারিয়ে ফেললে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় সুমিকে। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বলা হয় তিনি বিষ পান করে মারা গেছেন।
বিষয়টি নিহতের ভাইয়ের কাছে সন্দেহ হয়। তিনি ঘটনাস্থানে গিয়ে দেখেন, সুমির গলার দুপাশে লাল দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় তিনি ওই মাসের ১০ তারিখে ফুলতলা থানায় সোহান মোল্যাসহ আরও অজ্ঞাতনামা তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ৪ জুলাই ফুলতলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বোরহান উদ্দিন সোহান মোল্যাকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।