ঢাকার সাভারে আজিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তির ভুয়া পরোয়ানায় কারাভোগের ঘটনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৬০ দিনের মধ্যে এ তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভুয়া পরোয়ানায় ১০০ দিন কারাগারে থাকা আজিজুর রহমানকে ৮০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আজিজের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পিবিআই)-এর উপমহাপরিদর্শক, ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার, মাদারীপুর, জামালপুর, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ ইউনুস আলী রবি। তিনি বলেন, গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় ২০১৭ সালের ২০ মার্চ আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। মামলার বাদী জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন। ওই মামলায় ২০১৮ সালের ৬ মার্চ তাঁকে গ্রেপ্তার করে সাভার থানা-পুলিশ। পরে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে নিলে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আইনজীবী রবি বলেন, কয়েক দিন সেখানে থাকার পর আবদুল আজিজকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এর তিন দিন পর সেখান থেকে পাঠানো হয় কাশিমপুর কারাগারে। এভাবে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ১০০ দিন কারাভোগের পর ২০১৮ সালের ১২ জুন তিনি মুক্তি পান। জয়দেবপুর ছাড়াও চট্টগ্রামে তিনটি মাদক ও একটি ধর্ষণ, রাজধানীর মিরপুরে দুটি ধর্ষণ, জামালপুরে দুটি মারামারি, মাদারীপুরে একটি ডাকাতির মিথ্যা মামলায় আজিজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
নথি থেকে জানা যায়, মিরপুরের মামলার বাদী বিলকিছ আক্তার নামের এক নারী, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার তিন মামলার বাদী হলেন–এসআই ফিরোজ আলম, এসআই বিকাশ চন্দ্র শীল ও এসআই দেলোয়ার হোসেন। চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার মামলার বাদী এসআই আব্দুর রহীম।
ভুক্তভোগী সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের ফিরিঙ্গীকান্দা গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ দিন আমি প্রবাসে ছিলাম। দেশে ফিরে কৃষি কাজ করছি। আমার স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলে পরাজিত প্রার্থীর স্বজনদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আমি কারাগারে যাওয়ার পর তাঁরা আমার জমি দখল করে ঘর তৈরি করেছেন। এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’