চলতি বছরের চাহিদা মেটাতে ৬ দেশ থেকে ২১ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ তেল কিনতে খরচ হবে ১৮ হাজার ৭৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর সিংহভাগ তেল আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশে আসবে। এ ছাড়া নতুন করে ১২ হাজার টন চিনি ও ৬০ হাজার টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভায় মোট ১০টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। সভা শেষে অনুমোদিত বিভিন্ন ক্রয় প্রস্তাবের বিস্তারিত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি জানান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, আরব আমিরাত, চীন, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে মোট ২১ লাখ টন জ্বালানি তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এর মধ্যে ২০ লাখ ৪০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল ও ৬০ হাজার টন ডিজেল। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে এ তেল কেনা হবে।
সাঈদ মাহবুব খান জানান, ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে ৬০ হাজার টন ডিজেল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই তেল আমদানিতে ৫৪৫ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। চলতি বছরের মধ্যে এই তেল আমদানি করা হবে। তিনি আরও জানান, ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি, আরব আমিরাতের ইএনওসি, ভারতের আইওসিএল, চীনের পেট্রোচায়না, মালয়েশিয়ার পিটিএলসিএল, থাইল্যান্ডের পিটিটিটি এবং চীনের ইউনিপেক থেকে ২০ লাখ ৪০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে ১৮ হাজার ২১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা খরচ হবে। আগামী জুনের মধ্যে এ জ্বালানি তেল কেনা হবে।
এদিকে ক্রয় কমিটির সভায় প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন চিনি কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। কলকাতার শ্রীনোভা ইস্পাত প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এ চিনি কেনা হবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে। খরচ হবে ৭০ কোটি ২ লাখ টাকা। কেজিপ্রতি খরচ হবে ৫৬ টাকা। ভারত থেকে আনা চিনি কিনতে আগের চেয়ে বেশি দাম পড়ছে। গত বছরের ১০ নভেম্বর ব্রাজিল থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এতে খরচ হবে ৬৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
এদিকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১৫০ কোটি ৮ লাখ টাকায় এবং রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি সার ১৮৩ কোটি ৫১ লাখ টাকায় আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ক্রয় কমিটিতে ঢাকা ওয়াসার ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পে পরামর্শক সেবার ব্যয় ২৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বাড়ানো, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১১টি উপ-প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ নকশা প্রণয়নে ১৯৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকায় নতুন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ এবং ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতা বর্ধন প্রকল্পের তিন লটে বিআরবি কেব্ল থেকে ১৪ হাজার ৫০০ কিলোমিটার তার ১৫২ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।