জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে তিন শতাধিক ভাতাভোগী এক বছর ধরে ভাতার টাকা পাচ্ছেন না।
তাঁদের অভিযোগ, ভাতাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পর দু-একবার মোবাইল ফোন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাঁরা টাকা পেয়েছেন। তবে এর পর থেকে ভাতার টাকা পাচ্ছেন না। এদিকে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় বলছে, অধিকাংশ ভাতাভোগীর নিজস্ব মোবাইল ফোন নেই। অন্যের মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়ায় এ সমস্যা হতে পারে।
উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহিমপুর গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব জবফুল বেগম। তিনি এক বছর থেকে ভাতার টাকা পাচ্ছেন না। তাঁর অভিযোগ, ভাতাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পর একবার ভাতার টাকা পেয়েছেন। জবফুলের মতো এ উপজেলায় আরও অনেকেই বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন না। ভাতাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পর দু-একবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পেয়েছেন। এরপর এক বছর থেকে ভাতার টাকা পাচ্ছেন না।
জবফুল বেগম জানান, তাঁর স্বামী জহর উদ্দিন মারা গেছেন প্রায় ২৫ বছর আগে। সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে। জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় থাকেন তাঁরা। স্বামীহারা জবফুল অন্যের বাড়িতে কাজ করে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে বেঁচে আছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১৪ হাজার ১৫৬ জন বয়স্ক ভাতা, ৭ হাজার ১৩৯ জন বিধবা ভাতা, ২ হাজার ৯১৯ জন প্রতিবন্ধী ভাতা, ৭ জন হিজড়া ভাতা, ১১৫ জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাতা ও ৭৩৫ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছেন। তাঁদের সবার মোবাইল ফোন নম্বরে ভাতার টাকা নিয়মিত যাচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, অভিযোগকারীদের দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে ভাতার টাকা যাচ্ছে নিয়মিত। যাঁরা অন্যের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করছেন ভাতাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সময়, কেবল তাঁদের ক্ষেত্রেই এ সমস্যা দেখা যায়।
খাঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলার ৩ শতাধিক ভাতাভোগী দীর্ঘদিন থেকে তাঁদের ভাতার টাকা পাচ্ছেন না।
পাররামরামপুর ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের ভাতাভোগীদের সঙ্গে কথা হয়। উত্তর রহিমপুর গ্রামের বিধবা ভাতাভোগী আইফুল বেগম বলেন, ‘আমরা অভাবী মানুষ। ভাতার টাকায় আমাদের সংসারের অভাব অনেকটা দূর হয়েছিল। ভাতাভুক্ত হওয়ার পর একবার মোবাইলে ভাতার টাকা পেয়েছিলাম। এরপর এক বছর থেকে ভাতার টাকা আর পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা জয় কৃষ্ণ সরকার জানান, ভাতাভোগীরা নিরক্ষর ও দরিদ্র। তাঁদের অধিকাংশরই নিজস্ব মোবাইল ফোন নেই। অনেকেই ভাতাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সময় অন্যের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়েছেন। এ কারণে এমন সমস্যার হতে পারে।
উপজেলার প্রতিটি ভাতাভোগীদের মোবাইল ফোন নম্বরে নিয়মিত ভাতার টাকা যাচ্ছে। যাঁদের ওই সমস্যা রয়েছে, তাঁরা নিজস্ব মোবাইল ফোন নম্বরসহ সমাজসেবা কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে সমস্যার সমাধান করা হবে।