জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক হাটের শেড নির্মাণকাজের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও অধিকাংশ কাজ বাকি রেখে লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই হাটের প্রায় ২০০ ব্যবসায়ী। জানা গেছে, কেউ কেউ হাটের আশপাশে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করছেন। তবে জায়গার অভাবে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের রায়কালী বাজারে দ্বিতীয় তলার শেড নির্মাণকাজের চিত্র এটি। দুই মাস আগে ওই শেড নির্মাণকাজের সময়সীমা
শেষ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় রডে জং ধরেছে। এদিকে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরে ওই হাটে ইজারা ডাকও হয়নি।
নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্র ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সারা দেশে গ্রামীণ হাটবাজারের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রায়কালী হাটে দ্বিতীয় তলার শেড নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। সেখানে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকা চুক্তি মূল্যে নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মণ্ডল ট্রেডার্স কাজটি পায়। ২০২২ সালের ২৯ জুনের মধ্যে ওই শেডের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের দুই মাস পেরোলেও নির্মাণকাজের সিংহভাগ ফেলে রেখে লাপাত্তা হয়েছে।
চা-দোকানি নয়ন হোসেন বলেন, এখন হাটে আর তেমন দোকানপাট নেই, লোকজনও নেই। আগে দিনে দুই-তিন হাজার টাকার চা বিক্রি হতো। এখন লোকজন না থাকায় এক হাজার টাকারও বিক্রি হয় না।
কাপড় ব্যবসায়ী জামিদুল ইসলাম জানান, যে অংশে নতুন শেড নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রায় ২০০ দোকানঘর ছিল। অল্প কয়েকজন বাজারের আশপাশে চড়া ভাড়ায় ঘর নিয়ে ব্যবসা করছেন। দোকান না পেয়ে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর পথে বসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রকিব হাসান জানান, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করতে পারায় জামানতের টাকা নগদায়ন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ঠিকাদার ২৫ ভাগেরও কম কাজ করে চলে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে নওগাঁর মেসার্স মণ্ডল ট্রেডার্সের কর্ণধার জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন এবং খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মাস্টার বলেন, ‘নির্মাণকাজের জন্য চলতি বছর হাট ইজারা হয়নি। জানতে পেরেছি, লোকসানের ভয়ে ওই ঠিকাদার নাকি কাজ আর করবেন না।’ সরকার ও ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি করেছেন ঠিকাদার, সেই জন্য ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।