প্রযোজক অপু বিশ্বাসের প্রথম সিনেমা ‘লাল শাড়ি’। বানাচ্ছেন বন্ধন বিশ্বাস। নভেম্বরের প্রথম দিকে মানিকগঞ্জে শুরু হবে এর শুটিং। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে হয়ে গেল সিনেমার মহরত। যেহেতু সিনেমার নামের সঙ্গে মিশে আছে লাল, তাই আমন্ত্রণপত্র থেকে শুরু করে মহরত অনুষ্ঠানের মঞ্চসজ্জা, অতিথিদের পোশাক—সবকিছুতেই ছিল লালের আধিক্য। অপু নিজেও পরেছিলেন টুকটুকে লাল তাঁতের শাড়ি। প্রয়াত মা-বাবার ছবিও রেখেছিলেন মঞ্চের এক পাশে। তাঁদের ছবির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অপু।
শুধু প্রযোজনা নয়, ‘লাল শাড়ি’ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয়ও করবেন অপু। তাঁর সঙ্গে পর্দায় থাকবেন শহীদুজ্জামান সেলিম, সাইমন সাদিক, সুমিত সেনগুপ্ত, দিলরুবা দোয়েল প্রমুখ। মহরতে অপুকে শুভকামনা জানাতে এসেছিলেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, গাজী মাহবুব, অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা প্রমুখ।
মহরত অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে রাখা ছিল তাঁতের চরকা। সাধারণত কেক কেটে কিংবা ক্ল্যাপস্টিক হাতে নিয়ে সিনেমার মহরত হতে দেখা যায়। তবে ‘লাল শাড়ি’ যেহেতু তাঁতশিল্প নিয়ে তৈরি হচ্ছে, তাই তাঁতের চরকা ঘুরিয়েই সিনেমার শুভারম্ভ করলেন অপু বিশ্বাস।
দুই বছর আগে একটি সিনেমায় সাইন করেছিলাম, তখন আমার সিনেমার সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গেছে। তারপরও খুব হাস্যকর ব্যাপার যে, বলা হয়েছিল, আমি নাকি চলচ্চিত্র বুঝি না! প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কীভাবে চালাতে হয়, সেটা নাকি জানি না! আসলে আমিও কখনো প্রযোজনায় আসতে চাইনি। যিনি আমাকে এ পথে নিয়ে এসেছেন, তিনি আমার মা। আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নামটিও (অপু-জয় চলচ্চিত্র) তাঁর দেওয়া। মা চেয়েছিলেন, আমি কখনো সিনেমা প্রযোজনা করলে সেটা যেন অবশ্যই অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমা হয়। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী, ‘লাল শাড়ি’র চিত্রনাট্য সরকারি অনুদানের জন্য জমা দিয়েছিলাম।
প্রযোজনার মতো এত কঠিন কাজে নেমেছি, কিন্তু আমার কোনো ধরনের চাপ বোধ হচ্ছে না। কারণ, ‘লাল শাড়ি’ সিনেমায় যাঁদের সঙ্গী হিসেবে পেয়েছি, প্রত্যেকেই ভীষণ সহযোগিতা করছেন। উপদেশ-পরামর্শ দিচ্ছেন। সবার শুভকামনা নিয়ে প্রযোজনার পথে পা রাখলাম। আমার ভীষণ ভালো লাগছে যে, নতুন কিছু করছি।
সিনেমার মহরতে সাধারণত কেক কাটা হয়। তবে যেহেতু আমি শিল্পী, চেয়েছি শৈল্পিক কিছু রাখতে। তাই তাঁতের চরকা ঘুরিয়ে ‘লাল শাড়ি’র মহরত করেছি। আমাদের গ্রামবাংলার তাঁতশিল্পীদের অনেক গল্প আছে, যেটা আমরা হয়তো জানি না। আমি এখন যে শাড়িটা পরে আছি, এটা তাঁতিদের হাতেই তৈরি। এই শাড়ির সঙ্গে তাঁদের কত শ্রম মিশে আছে! অথচ তাঁতিরা বেশির ভাগ সময়ই তাঁদের পরিশ্রমের মূল্য ঠিকমতো পান না। পদে পদে বঞ্চিত হন। এটা নিয়েই আমার ‘লাল শাড়ি’র গল্প।