হোম > ছাপা সংস্করণ

চড়া সুদের ঋণের ফাঁদে নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষ

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর

ঢাকায় রিকশা চালাতেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সাদেকুল ইসলাম। বছর দেড়েক আগে উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের সুদ কারবারি মালেক মিয়ার কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। পরে ২৩ হাজার টাকা পরিশোধও করেন। তবে মালেক মিয়ার দাবি, সুদে-আসলে আরও ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। তা না পারায় সাদেকুলের বাবা ও ভাইয়ের তিনটি গরু জোর করে নিয়ে যান মালেক। এরপর সাদেকুলের বসতঘর ভেঙে টিন, খুঁটি ও আসবাবও নিয়ে যান তিনি।

শুধু সাদেকুল নয়, মালেকের মতো স্থানীয় প্রভাবশালী সুদখোর মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে শেরপুরের শত পরিবার। সময়মতো সুদের টাকা দিতে না পারায় জোর করে গবাদিপশু, জমি ও বসতভিটা দখলসহ মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় এসব দাদন ব্যবসায়ীর দৌরাত্ম্যে এলাকাছাড়া হয়েছেন অনেকে, অতিষ্ঠ এলাকার বাসিন্দারাও। তবে কোনো লিখিত প্রমাণ না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা। ফলে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেঁচে যাচ্ছেন অভিযুক্তরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেরপুরে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধিত সমিতি রয়েছে ১ হাজার ১০৫টি। তবে বাস্তবে এর চেয়ে অনেক বেশিসংখ্যক সমিতি ও ব্যক্তি নিবন্ধন ছাড়াই জেলাজুড়ে সুদের কারবার চালাচ্ছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দাদন ব্যবসায়ীর দাবি, সমবায়ের অনুমোদন নিয়েই সদস্যদের মধ্যে তাঁরা স্বল্প পরিমাণে ঋণ দিয়ে থাকেন। একবারে একটা পরিমাণের টাকা দেওয়া হয়। পরে তাঁরা সপ্তাহে সপ্তাহে ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। তাঁরা কাউকে জোর করে ঋণ দেন না।

সদর উপজেলার চরশেরপুর তালুকপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী মো. বাবুল মিয়া বলেন, স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে সোয়া এক লাখ টাকা সুদে নিয়েছিলেন তিনি। পরে তিন কিস্তিতে ৬৫ হাজার টাকা সুদ দিয়েছেন। তবে দাদন ব্যবসায়ী রফিকুল আসল ছাড়াই আরও এক লাখ টাকা লাভ দাবি করছেন।

এ জন্য কিছুদিন ধরে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শেরপুর শহরে ভাড়া থাকছেন তিনি।

শহরের আখেরমামুদ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মিসকিন মিয়া জানান, তিনি স্থানীয় এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিন লাখ টাকা সুদে ঋণ নেন। এরপর প্রায় তিন লাখের মতো টাকা পরিশোধের পর ওই দাদন ব্যবসায়ী আরও সুদ দাবি করছেন।

এ বিষয়ে জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, সমবায়ের নিবন্ধন নিয়ে ব্যাংকের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করা বা সদস্যদের বাইরে ঋণ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই তাঁদের। এ রকম কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ শেরপুরের আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সমাজের অসহায় মানুষের সচেতনতার অভাবের সুযোগ নিচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে বাড়ছে সামাজিক অপরাধও।

শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক জানান, অনুমোদন নেই এমন তথ্য পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ