জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন আজ বুধবার। দীর্ঘ ৬ বছর পর অনুষ্ঠেয় সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি বিরাজ করছে সাজ সাজ অবস্থা। তবে উপজেলা সদরে খোলা মাঠে প্রশাসনের অনুমতি না পেয়ে উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নে দলীয় আঞ্চলিক কার্যালয় প্রাঙ্গণে সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব নুরল ইসলাম নবাব।
পদ-পদবি বাগিয়ে নিতে দলীয় নেতাদের দৃষ্টি ফেরাতে সম্মেলন উপলক্ষে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে নানা রঙের ফেস্টুন, ব্যানারসহ নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে দলীয় নেতাদের ছবিসংবলিত বিশাল বিশাল তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুলের বসতবাড়ির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে ইসলামপুর আসনের সাবেক এমপি সুলতান মাহমুদ বাবুকে সভাপতি এবং নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়।
এরপর ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক গাউসুল আজম শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইসলামপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করা হয়। এতে সুলতান মাহমুদ বাবুকে আহ্বায়ক এবং নুরল ইসলাম নবাবকে সদস্যসচিব করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। একই দিন আব্দুল করিম ঢালীকে আহ্বায়ক এবং জাকির হোসেনকে সদস্যসচিব করে ইসলামপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সম্মেলন সম্পন্ন করতে চলছে শেষ মুহূর্তের কর্মযজ্ঞ। দীর্ঘ ৬ বছর পর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে হতে যাওয়ায় সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
দলীয় পদ-পদবির আশায় কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টিতে ফেরাতে উপজেলা সদর থেকে শুরু করে সম্মেলনস্থল পর্যন্ত নির্মাণ করা হয় বিশাল বিশাল তোরণ। সাঁটানো হয়েছে ফেস্টুন ও ডিজিটাল ব্যানার।
ফেস্টুন-ব্যানারে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবিসহ সম্মেলন সার্থক ও সফলতা করার বিভিন্ন দাবির কথা লেখা রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব নুরল ইসলাম নবাব বলেন, ‘দলের সম্মেলন করতে উপজেলা সদরে খোলা মাঠে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু খোলা মাঠের বিপরীতে উপজেলা সদরে দলীয় কার্যালয়ের অভ্যন্তরে সম্মেলনের অনুমতি দেয় প্রশাসন।
দলীয় কার্যালয়ের অভ্যন্তরে নেতা-কর্মীদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতেরচর সরকারবাড়িস্থ দলের আঞ্চলিক কার্যালয় প্রাঙ্গনে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দলের কোনো পদে প্রতিদ্বন্দ্বীদের নাম শোনা যাচ্ছে না। তবে সম্মেলনের মঞ্চেই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কেউ চাইলে সম্মেলন চলাকালে যেকোনো পদে প্রার্থী হতে পারবেন।’
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সাংসদ সুলতান মাহমুদ বাবু বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে ১৪টি শাখা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এখানকার বিএনপিকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে গড়ে তোলা হবে। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছি।