বাড়ির পাশে মাল্টা বাগান করে সফল হয়েছেন কুষ্টিয়া ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের ময়না খাতুন। গত বছর প্রতিকেজি মাল্টা ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
এর কেবল মাল্টা বিক্রি করে ইতিমধ্যে ৩ লাখ টাকা ঘরে তুলেছেন ময়না। তবে গত বছেরর থেকে এ বছর বিক্রি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা তার। গত বছরের তিন লাখ ছাড়িয়ে এ বছর পাঁচ লাখ টাকার মতো মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ময়না বেগম জানান, ছয় বছর আগে এ উপজেলায় প্রথম মাল্টা বাগান গড়ে তুলেন তিনি। ৬ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন মাল্টার বিশাল বাগান। নিজ হাতেই বাগান পরিচর্যার পাশাপাশি বাগান পরিচর্যায় দুজন শ্রমিক নিয়োগ করেছেন তিনি।
ময়না খাতুনের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক প্রায় দুই যুগ ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। স্বামীর উৎসাহে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত জমিতে তিনি এ বাগান তৈরি করেন।
মাল্টা বাগানে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে মাল্টা। বাতাসে মাল্টার টক-মিষ্টি গন্ধ বাগানময় ছড়িয়ে আছে।
ময়না খাতুন জানান, স্বামীর অনুপ্রেরণায় ২০১৭ সালে সিলেট থেকে ৫৭০টি বারি মালটা-১ এর চারা নিয়ে এসে নিজের ছয় বিঘা জমিতে বাগান গড়ে তুলেন। এ বাগানে করতে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার। ১১০-১২০ টাকা দরে গত বছর তিন লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হয়েছে। বাগান থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে মাল্টা কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন দর্শনার্থীরা বাগান দেখতে ভিড় করেন।
ময়না খাতুন বলেন, নারী হিসেবে তাকে সফল হতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। শুনতে হয়েছে নানান কথা। তবু নিজ প্রচেষ্টায় এগিয়ে গেছি। আজ আমি সফল। সবাই এখন আমার প্রশংসা করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়খুল ইসলাম বলেন, মাল্টা একটি অর্থকরী ফসল। ময়না খাতুনের মাল্টার বাগান ছাড়াও উপজেলায় আরও কিছু মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে। কৃষি অফিস সব সময়ই বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে।
চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপন বলেন, একজন নারী হয়েও ময়না খাতুন সুন্দর একটি মাল্টা বাগান গড়ে তুলেছেন। সমাজে নারীরা পিছিয়ে নেই, তার প্রমাণ সে। তার এই উদ্যোগ অন্য অনেককে উৎসাহিত করবে। বিশেষ করে নারীদের।