আজ বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের প্রথম দিন। আর ৯ দিন পর আলোচিত ১০ ডিসেম্বর। এদিন ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে ঢাকায় সমাবেশ করবে বিএনপি। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে। কী হবে ১০ ডিসেম্বরে?
বিএনপির এই কর্মসূচি নিয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে চিন্তিত হওয়ার কথা না বললেও ঢাকাজুড়ে নিচ্ছে ব্যাপক নিরাপত্তার প্রস্তুতি। দুই সপ্তাহের জন্য সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কর্মরতদের পাশাপাশি ১৫ হাজার অতিরিক্ত পুলিশও আনা হচ্ছে। সবার মনে প্রশ্ন, পুলিশ কি ১০ ডিসেম্বর নিয়ে খুব চিন্তিত?
কেউ কেউ মনে করছেন, জঙ্গি পালিয়ে যাওয়া, সমাবেশ ঘিরে তৃতীয় পক্ষের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা, মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সমাবেশের মতো কোনো কিছুর আশঙ্কা সামনে রেখেই ভেতরে-ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ, যাতে যেকোনো পরিস্থিতি সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তরের শীর্ষ পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, এরই মধ্যে রাজধানীর সব থানায় বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে আছে জমায়েত ঘিরে নাশকতার ব্যাপারে আগাম সতর্কতা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিলেও কোনো বিশৃঙ্খলা একেবারেই মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সদর দপ্তরের যুগ্ম কমিশনার পর্যায়ের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সমাবেশ নিয়ে বাহিনীর উচ্চস্তর থেকে মাঠপর্যায়ের সবাই আছেন চাপের মধ্যে।
ওই কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কর্মসূচি নিয়ে পুলিশ কী ভাবছে? এমন প্রশ্নে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, পুলিশ কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষ নয়। কিন্তু আইনবহির্ভূত কোনো কাজ কিংবা সরকারবিরোধী কোনো তৎপরতা শুরু হলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। পুলিশ সে রকম প্রস্তুতিই রাখছে।
একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ২০১৩ সালে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার পর হেফাজতে ইসলামের ঘটনা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে পুলিশ। ওই দিন যেমন তারা রাস্তায় বসে পড়েছিল, বিএনপি যদি লোকসমাগম দেখে এমন কিছু করার চিন্তা করে, তাহলে কম সময়ের মধ্যে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, তা নিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ জন্য ডিএমপির ৩২ হাজার লোকবলতে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন কমিশনার। সমাবেশের আগে এবং পরে রাজধানীর হোটেল, মেসসহ বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক তল্লাশি চালাবে পুলিশ।
ঢাকার দুই অপরাধ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার পরপরই থানা ও ফাঁড়িগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আর বড় সমাবেশের আগে যেমন প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তা তো থাকবেই।
এর আগে ডিসেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সব বিভাগের সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মৌখিকভাবে সব বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য যা দরকার, সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় থাকবেন ১৫ হাজারের বেশি পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্য।