হোম > ছাপা সংস্করণ

এক ডজন খেলার মাঠ বেহাল

খান রফিক, বরিশাল

বরিশাল নগরের খেলার মাঠগুলোর অবস্থা ভালো নয়। কোনো কোনো খেলার মাঠে এখন অট্টালিকা। আবার কোনোটা দখল হতে হতে ছোট হয়ে গেছে। কোথাও দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে মাঠে খেলা গড়ানোর অবস্থাই নেই। নগরের এমন এক ডজন খেলার মাঠ নিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের সভায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।

জমিদার পরেশ রায়ের নামে বরিশাল জিলা স্কুলের বিশাল আকারের পরেশ সাগরের মাঠে এক সময় বড় বড় খেলার আসার জমত। কিন্তু সেই মাঠ এখন নানাভাবে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। মাঠের অবস্থা যেন চষা খেত। গত বৃহস্পতিবার বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই মাঠটি খেলার উপযোগী না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, এই খেলার মাঠ বহুদিন মেলার নামে দখল করে নষ্ট করা হয়েছে।

বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, গত বছর মেলার নামে ৬ মাস পরেশ সাগর মাঠটি দখল করে রাখা হয়েছিল। সেটি সংস্কার না করায় মাঠ এখন ইটের খোয়া, খানাখন্দে ভরা। আশপাশে বেদখলও হয়ে গেছে। ফেলে রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। তিনি জানান, খেলার মাঠটি এখন আর খেলার উপযোগী নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু আর্থিক বরাদ্দ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি এখন পরিকল্পনা নিয়েছেন মাঠটি মসৃণ করার।

পরেশ সাগর মাঠসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব কুমার রায় পিংকু বলেন, মাঠটি মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। তাঁতমেলায় বাঁশ ও স্থাপনা বসানোর কারণে উঁচুনিচু হওয়ায় খেলার অবস্থা নেই। মহিলা পলিটেকনিক কলেজের নির্মাণসামগ্রী রাখাও হয়েছে মাঠের মধ্যে। তিনি জানান, এই মাঠে এক সময় তাঁরা খেলাধুলা করতেন। মাঠটি এখন কেবল গরু-বাছুর চরানোর কাজেই ব্যবহৃত হয়।

একইভাবে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যান, বিএম স্কুল মাঠ, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ মাঠ, এ কাদের স্কুল মাঠ, টিবি হাসপাতাল মাঠ, হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ ময়দান অযত্ন আর অবহেলায় খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী বঙ্গবন্ধু উদ্যান অযত্ন আর অবহেলায় বেহাল। গোটা মাঠই ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলার অনুপযোগী। খানাখন্দে ভরা মাঠটি। জানা গেছে, এক যুগেও এর কোনো সংস্কার হয়নি। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রতিদিন প্রাতর্ভ্রমণে যাওয়া এ বি এম মাসুদ করিম বলেন, উদ্যানটি সংস্কার করা খুবই জরুরি। কারণ বৃষ্টির সময় মাঠে পানি জমে থাকে। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফারুক এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু উদ্যান সংস্কারে সিটি মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ মাঠের উত্তর পাশে কর্তৃপক্ষ ভবন করায় বিশাল মাঠটি ছোট হয়ে গেছে। নগরের এ কাদের বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে সেখানে উঠেছে বহুতল ভবন। টিবি হাসপাতালের মাঠেও নানা স্থাপনা হওয়ায় মাঠের অস্তিত্ব সংকুচিত হয়ে গেছে। একই অবস্থা বিএম স্কুল মাঠের। স্কুলের সভাপতি মাহবুব মোর্শেদ শামিম অবশ্য জানান, তাঁদের মাঠে কিছু সংস্কার করা হলেই খেলাধুলার উপযোগী করা যাবে। তিনি সভাপতি হওয়ার পর আর মাঠে মেলা করতে দেননি।

নগরের হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ ময়দান সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে ফেলায় এক সময়ের এই খেলার মাঠে আর খেলাধুলার অবস্থা নেই।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ মাঠ, এ কাদের স্কুল মাঠ, টিবি হাসপাতাল মাঠ ছিল ছেলেমেয়েদের খেলার অন্যতম স্থান। শিক্ষার্থীদের জন্যও এখন আর খেলার মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না। খেলাধুলা না করলে নতুন প্রজন্ম কীভাবে এগিয়ে যাবে। অথচ বিএম, কাউনিয়া স্কুলের মতো অনেক স্কুলের মাঠ দেয়াল দিয়ে আটকে ফেলা হয়েছে।’ এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সোহেল মারুফ বলেন, ‘বরিশাল নগরে স্টেডিয়াম ছাড়া কোনো মাঠে কি ক্রিকেট ফুটবল খেলার অবস্থা আছে! এ অবস্থার উন্নতি ঘটাতে নগরের ভেতরে যেসব খেলার মাঠ রয়েছে, তা সংস্কার করে নতুন প্রজন্মের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। পরেশ সাগর মাঠ সংস্কারে ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’ এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু উদ্যানসহ অন্য সব বড় মাঠের বিষয়েও তাঁরা উদ্যোগী হবেন বলে জানান। খেলার মাঠগুলোকে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার উপযোগী করতে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ