হবিগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে। চলতি সপ্তাহে এ ভাইরাসে শনাক্তের হার ২৮ থেকে বেড়ে ৪৩ শতাংশ হয়েছে। ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রশাসন ও বিচার বিভাগের ১৯ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
হবিগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য জানায়।
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে র্যাপিড টেস্ট ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাব থেকে আসা রিপোর্টে এই ৫৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, ১২২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ করোনা রোগী শনাক্ত হন। এর মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৫, বাহুবলে ৯ ও নবীগঞ্জে ৯ জন। বর্তমানে শনাক্তের হার ৪৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। মোট শনাক্ত ৬ হাজার ৯৫৩ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৯৩৬ জন ও মারা গেছেন ৪৮ জন।
গত বছরের ২৯ আগস্ট হবিগঞ্জ জেলায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন ১৫৯ জন। এরপর থেকে কমতে থাকে আক্রান্তের হার। কিছুদিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল শূন্যের কোঠায়।
এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে করোনা সংক্রমণের হার আবারও বাড়তে থাকে। এমনকি প্রশাসন ও বিচার বিভাগের ১৯ কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রোববার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হবিগঞ্জ আদালতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোট ২৮ জন। এর মধ্যে ১০ জন বিচারক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৯ আগস্ট জেলায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন ১৫৯ জন। এরপর থেকে কমতে থাকে আক্রান্তের হার। কয়েক মাস করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল শূন্যের কোঠায়।
অপরদিকে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজেন ব্যানার্জী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুদ্দিন মো. রেজা, বাহুবলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন ফাতেমা ও নবীগঞ্জ সহকারী কমিশনার ভূমি উত্তম কুমার দাস।
কর্মচারীদের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সিএ আবদুল মালেক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব’র সিএ শেখ আল-আমিন ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কাজল মিয়া।
এ ছাড়া হবিগঞ্জ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের ১৬ ছাত্রীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের অধ্যয়নরত ১৯০ ছাত্রীর মধ্যে ১৬ জনের করোনা শনাক্ত এবং আরও কয়েকজনের উপসর্গ থাকায় গত শনিবার কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, কয়েক দিন আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা বাড়তির দিকে। পুনরায় যেন খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, এ জন্য সবাইকে অবশ্যই সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। প্রতিটি জায়গায় শতভাগ মাস্ক পরা নিশ্চিতের বিকল্প নেই।