গৌরীপুর উপজেলায় পুরোদমে ধান কাটা শুরু হলেও সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকেরা। ফলে আমন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে আশঙ্কা করছে উপজেলা খাদ্য বিভাগ। বাজারে ধানের প্রচুর জোগান থাকলেও এখনো খালি পড়ে আছে খাদ্যগুদাম। গৌরীপুরে চলতি মৌসুমে চার হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কেনা হয়েছে মাত্র দুই টন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার ধান কেনার সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৭ টাকা। সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে হয় শুকিয়ে ও নির্দিষ্ট আর্দ্রতায়। এটি ঝামেলাপূর্ণ ও সময় সাপেক্ষ মনে করেন কৃষক।
শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক শাহীন মিয়া বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি অনেক ঝামেলার। শুকনো ও নির্দিষ্ট আর্দ্রতা যাচাই করে ধান কেনেন তারা। আর পাইকারি বাজারে সহজেই ধান বিক্রি করা যায়। শুকানোর ঝামেলাও নেই।
অপরদিকে পাইকারি বাজারে কৃষকেরা ভেজা ধান বিক্রি করছেন প্রায় সমমূল্যে। যে কারণে সরকারি গোডাউনের চেয়ে পাইকারি বাজারে ধান বিক্রি কম ঝামেলাপূর্ণ ও লাভজনক মনে করেন তাঁরা।
গৌরীপুর উত্তর বাজারের পাল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব পাল জানান, এবার আমন মৌসুমে ধান ক্রয় করা হচ্ছে ৫৯ ধান প্রতি মন ১ হাজার ২০ টাকা, ফাইজং ১ হাজার ২৫০, আতপ ৩৪ ধান ১ হাজার ৬৩০ ও মোটা ৯১০ টাকা।
গৌরীপুরের খাদ্য কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বলেন, এবার আমন কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে দুই টন কেনা হয়েছে। সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রির জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপজেলায় মাইকিং করা হয়েছে। তবে সরকারি মূল্যের চেয়ে পাইকারি বাজারে ধানের মূল্য বেশি থাকায় শঙ্কা থাকলেও লক্ষ্য পূরণে আশাবাদী তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, এবার আমন উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টন। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। ঝামেলা কম ও মূল্য বেশি থাকায় সরকারি খাদ্যগুদামের চেয়ে পাইকারি ধান বিক্রি করতে বেশি আগ্রহী দেখা যায় কৃষকদের।
এদিকে আগেই ধান চাল সংগ্রহ শুরু হলেও গৌরীপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা খাদ্যগুদাম চত্বরে সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এর উদ্বোধন করেন।