কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের আট স্থানে ফুলকুমর নদ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এতে এলাকার রাস্তাঘাটসহ অনেকের আবাদি জমির ক্ষতি হচ্ছে।
জানা গেছে, নাগেশ্বরীর রায়গঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর রাঙালিরবস আবাসন এলাকা থেকে পূর্ব রাঙালিরবস এলাকার ফুলকুমর নদে এক কিলোমিটারের মধ্যে ৬টি এবং রতনপুর এলাকার নদের ভাটিতে আরও দুই স্থানে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব বালু আবাদি জমি ভাড়া নিয়ে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বাড়িঘরসহ আবাদি জমি।
বালুর স্তূপ থেকে প্রতিদিন ২২টি ট্রাক্টর দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বালু পরিবহন করায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। এসব বালু উত্তোলন এবং বিক্রিতে গড়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলের নেতৃত্বে এই সিন্ডিকেট বালুর ব্যবসা করছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
পূর্ব রাঙালিরবস এলাকার কৃষক আইনুদ্দিন জানান, বালু তোলার ফলে তাঁর দুই বিঘা আবাদি জমি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। একই এলাকার আবদুস ছালাম জানান, তাঁর জমিসহ বেশ কিছু গাছ নদের ভাঙনে চলে গেছে। এ ছাড়া মরিয়ম বেগম জানান, বালু তোলার পাইপ আবাদি জমির ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় অনেক ক্ষতি হচ্ছে। যাঁরা বালু তুলছেন, তাঁরা ক্ষমতাবান হওয়ায় কেউ এর প্রতিবাদ করতে পারেন না।
সিন্ডিকেটের প্রধান সৌমিত রহমান জানান, কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়ক উন্নয়নকাজে রানা বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিন লাখ সিএফটি বালু দেওয়ার চুক্তি হয়েছে তাঁর। এ পর্যন্ত দুই লাখ সিএফটির বেশি বালু সরবরাহ করা হয়েছে। তবে প্রশাসন চাইলে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সৌমিতের মা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা বেগম অনন্যার দাবি, তাঁর ছেলে বালু কিনে সড়কের উন্নয়নে বিক্রি করছেন। এতে কারও ক্ষতি হচ্ছে না।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু তোলার সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসন সোচ্চার রয়েছে। ইতিপূর্বে আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযানে গিয়েছি। এর বিরুদ্ধেও আমরা অভিযান চালাব।’