সাংবাদিকদের পেটানো ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হুমকি দেওয়া জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাসির উদ্দিন আহমদের প্রত্যাহারের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা। নতুন করে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শনিবার (আজ) বিক্ষোভ মিছিল এবং রোববার (আগামীকাল) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে সমাবেশ।
জানা গেছে, পুলিশ সুপারের (এসপি) প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় স্থানীয় বকুলতলা চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। সাংবাদিকদের এই মানববন্ধন থেকে আগামী দুই দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
মহামারি ওমিক্রন ভাইরাসে আতঙ্কের মধ্যে আয়োজন করা হয় পুলিশ মাঠে মাসব্যাপী পুনাকের মেলা। গত ৩ ডিসেম্বর রাত ৮টায় মেলার বিষয়ে পুলিশ সুপার জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে বৈঠকের আহ্বান করেন। সেই বৈঠকে জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত না থানায় ক্ষিপ্ত হন এসপি নাছির উদ্দিন আহমেদ।
জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান তার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সেখানে অনুপস্থিত থাকায় তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে এই দুজনকে নিয়ে এসে পিটিয়ে পাছার চামড়া তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। তখন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এসপির এই আচরণে উপস্থিত সাংবাদিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে চলে আসেন। রাতেই জামালপুর প্রেসক্লাবে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পিটানোর হুমকির ঘটনায় জেলা প্রেসক্লাবের নেতারা তীব্র নিন্দা জানিয়ে দুই ক্লাবের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্মরত সাংবাদিকদের মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সাংবাদিক নেতারা জানিয়েছেন, জামালপুর থেকে এই এসপির প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। গতকাল শুক্রবারের দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক সুশান্ত কানু। সাংবাদিক মোস্তফা মনজুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক এম এ জলিল, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, আনোয়ার হোসেন মিন্টু প্রমুখ।