সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বন্যার কারণে বন্ধ থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বন্যার রেশ এখনো কাটেনি। উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের আঙিনা ও যাতায়াতের পথে পানি থাকায় এখনো ক্লাসে ফেরেনি শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শনিবার বন্যার পানি কমে যাওয়ায় বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান চালু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উপস্থিত হলেও সেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ২০ মে থেকে জগন্নাথপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। ফলে কয়েকটি বিদ্যালয়ে খোলা হয় আশ্রয়কেন্দ্র। কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয় ৬০টি পরিবার। পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় গত ২২ মে থেকে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত বিদ্যালয়, বিদ্যালয় সড়ক ডুবে যাওয়া ও বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে এমন বিদ্যালয়গুলোর তথ্য সংগ্রহ করে উপজেলার ১৫৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৫টি বিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে। বন্যার পানি কমতে শুরু করলে শনিবার থেকে এসব বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়।
তবে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ঐয়ারকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও আঙিনাসহ যাতায়াত পথে পানি থাকায় পাঠদান সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে গেলও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় যেতে পারেননি।
অভিভাবকেরা জানান, এখনো বিদ্যালয় যাতায়াতের পথে বন্যার পানি রয়েছে। এমন অবস্থায় শিশুদের জন্য বিদ্যালয় যাওয়া বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরও কিছুদিন বিদ্যালয় বন্ধ রাখা প্রয়োজন ছিল বলে এ সময় দাবি করেন তাঁরা।
সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে শ্রেণিকক্ষগুলোতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। লাইব্রেরিতে এখনো পানি রয়েছে। গতকাল অফিসের কাজ করা হলেও পাঠদান সম্ভব হয়নি।
উত্তর জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিনা খানম জানান, শিক্ষাকর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার থেকে আমরা বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু করেছি। যাতায়াত পথে পানি থাকায় শিক্ষার্থী বিদ্যালয় আসতে পারেনি। তিনি বলেন, পানি কমলেও বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে এখনো বন্যার পানি রয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দাস বলেন, বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আমরা বিদ্যালয়গুলোর পাঠদান চালুর নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, যাতায়াত পথে পানি থাকায় কয়েকটি বিদ্যালয়ে এখনো পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না।