আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহের প্রয়োজনে কুলা, চালুন, ঢাকিসহ বাঁশজাত পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে দামও। এতে কৃষকের কেনার সীমানা অতিক্রম করলে বাঁশশিল্পের কারিগরদের মুখে হাসি ফুটছে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সবাই হাঁপিয়ে উঠেছেন।
মধুপুর উপজেলার রানিয়াদ, মাস্টারপাড়া, লাউফুলা, ডিগরবাইদ, পিরোজপুর, কুড়ালিয়া, টেংরীসহ বেশ কিছু গ্রামে বাঁশের পণ্য তৈরি হয়ে থাকে। কয়েক মাস এসব পণ্যের চাহিদা না থাকায় মহাসংকটে দিন কেটেছে তাঁদের। আমন মৌসুমের শুরুতে এসে কুলা, চালুন, ঢাকি, ডালা, চালনি, খলই, খাঁচা, চাটাই, ধারির চাহিদা বেড়েছে।
সরেজমিনে মধুপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কুলা, ডালা ও চালুনের বাজারে ব্যাপক ভিড়। সবাই ধান ঘরে তোলার জন্য কুলা, চালুন, ঢাকি, খাঁচা কিনে নিচ্ছেন। অন্য সময়ের চেয়ে এসব জিনিসের দাম অনেক বাড়তি। যে কুলার দাম আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা, সেটি এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পিরোজপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ৬০ টাকার চালুন কিনতে হলো ৮০ টাকায়। ঢাকি ২২০ টাকা, ঝাড়ু ৮০ টাকা, খাঁচা প্রকার ভেদে ১৫০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ী বিপ্লব মিয়া বলেন, এসব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে মাত্র পাটি পরিবার এই পেশায় নিয়োজিত। আমাদের শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো বাঁশ। বর্তমানে বাঁশের দাম অনেক বেশি। আগের দিনে প্রতিটি বাড়িতেই বাঁশঝাড় ছিলে। সহজেই কম মূল্যে বাঁশ কিনতে পাওয়া যেত।
পিরোজপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর আগেও ভালো একটি তল্লা বাঁশ ৫০ টাকায় কেনা যেত। বর্তমানে ২০০ টাকার নিচে বাঁশ কিনতে পাওয়া যায় না। একটি বাঁশ দিয়ে ১২-১৫টি চালুন তৈরি করা যায়। শ্রম দিতে হয় দিনভর। সব মিলিয়ে যে ব্যয় হয়, তাতে সংসার চালাতে হয় টানাটানি করে।
শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, জিনিসের দাম যতই বাড়ুক, সংসারের প্রয়োজনে কুলা, চালুন ও ডালা লাগবেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসবের দামও বেড়েছে অনেক গুণ। তবে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এর কারিগরদের জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি।