হোম > ছাপা সংস্করণ

‘কিরাম দিন যাবি আমাগের’

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা

‘বাজারে আসলি মাথা ঘোরে। মাছ থেকে শুরু করে চাল, তেল, মসলা, ডিম—সবকিছুর দাম সামর্থ্যের বাইরে। বাদ ছিল কাঁচা সবজির দাম, যা সস্তায় কিনে অন্তত ভাত মেখে খাওয়া যেত। তার দামও কোনোটার ৫০ টাকার নিচে নেই। এখন কিরাম দিন যাবি আমাগের!’

মাগুরা সদরের পুরোনো বাজারে কাঁচা সবজি কিনতে এসে গতকাল নিজের অসহায়ত্বের কথা এভাবেই শোনালেন দিনমজুর আবু তালেব মিয়া। বাসাবাড়িতে ইট গেঁথে যার দৈনিক আয় ৫০০ টাকা। তিনি বলেন, মাছের দাম বেশি বলে কিনতাম ডিম। এখন ডিম ৫৪ টাকা হালি। কদিন অর্ধেক করে ডিম খাওয়া ধরলাম। কিন্তু একটা লাউ কিনতি গিলি লাগে ৬০ টাকা। এক কেজি বেগুন ৭০ টাকা। আবার লালশাক কেনবো ভাত মাখায় নিয়ে খাওয়ার জন্য, তা কেজি এখন ৫০ টাকা। কন তো ভাই, কিরাম সংসার চালাব?

পুরোনো বাজার মাগুরা জেলার অন্যতম বড় বাজার। খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে পাইকারি বিক্রেতারা এখানে কেনাবেচা করেন। পুরোনো বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা জিয়াউল রহমান বলেন, কোনো মালই ঠিকমতো পাচ্ছি না। কাঁচা মাল ঠিকমতো আসে না। যতটুকু দরকার, আসে তার চার ভাগের এক ভাগ। যে কারণে দাম অনেক বেশি। আমরা অল্প লাভে বিক্রি করছি। কারণ, কাস্টমার সবাই সমান না। অনেকে দাম বেশি বলে তরকারি ছুঁয়েও দেখে না। এই ধরেন, উচ্ছের দাম কেজি ৮০ টাকা। কতজন কিনতে পারবে এই দামে? ৫০ টাকার ওপরে প্রায় সবকিছুর দাম চলে গেছে। একমাত্র আলু আছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি। এ ছাড়া সব কাঁচা তরকারির দাম ৫০ টাকার ওপরে।

রত্না খাতুন নামের এক গৃহকর্মী বলেন, ‘এক পদ তরকারি যদি ৫০ টাকা হয়, তবে মাছ কিনা হয় না। ডিম যে খাব, তার দাম তো এখন ৫৪ টাকা হালি। এর সঙ্গে সবজি, বেগুন, লাউ ভালো লাগে। অথচ এসব তরকারি কেনার মতো টাকা নেই। কারণ, আমার আয় তো বাড়েনি। প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে পাই।’

খুচরা ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন জানান, ঢ্যাঁড়স কেজিতে ৬০, বেগুন ৬০-৭০, পটোল ৬০, লম্বা বেগুন ৭০, লাউ পিস ৫০-৬০ টাকা, চালকুমড়া ৫০ টাকা, পালংশাক কেজি ৮০ টাকা, লালশাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি দামের সঙ্গে খুচরা বিক্রিতে লাভ সীমিত বলে জানান এই বিক্রেতা।

এদিকে মাগুরার একমাত্র কাঁচাবাজার একতা আড়তে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি কাঁচা তরকারিতে খুচরা বাজারের সঙ্গে দামের পার্থক্য রয়েছে ৫ থেকে ১৫ টাকা। অর্থাৎ খুচরা বাজারের এক কেজি বেগুন যেখানে ৭০ টাকা, তা পাইকারি বাজার থেকে কেনা হয় ৫৫-৬০ টাকায়।

পাইকারি বিক্রেতা বাবুল হোসেন জানান, যশোরের মনিরামপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ উত্তরাঞ্চল থেকেও কাঁচা তরকারি আসে মাগুরায়। তবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর থেকে গাড়িভাড়া বেড়ে গেছে। তাই সেই গাড়িভাড়ার বাড়তি মূল্যে এখন সবকিছুর ওপর বণ্টন হয়ে গেছে।

মাগুরা বাজার বিপণন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাজারে সবজির দাম বেড়েছে তেলের দাম বাড়ার পরপর। আমরা কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, তেলের দাম বাড়ার ফলে উৎপাদনেও বেড়েছে খরচ।’

আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের নাগরিকেরাও হিসাব করে জীবন যাপন করছেন বলে আমরা গণমাধ্যমে দেখছি। বলা হচ্ছে, এ রকম সংকট তৈরি হয়েছে কয়েকটি দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে। যার প্রভাব আমাদের রাষ্ট্রেও পড়েছে। তবু আমরা সরকারের নির্দেশনায় চেষ্টা করছি কাঁচা তরকারির দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে। এ জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি কৃষকদের সঙ্গে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ