মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। কেবল দল বেঁধে বাস করলেই সমাজ হয় না। প্রত্যেক মানুষ একে অপরের কল্যাণের কথা ভেবে, সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে, নিয়ম ও শৃঙ্খলার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বাস করলেই সে জনগোষ্ঠীকে সমাজ বলে। সামাজিক বন্ধন সুশৃঙ্খল ও সুদৃঢ় রাখার জন্য ইসলাম প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচারের নির্দেশ দিয়েছে।
কোরআনে এরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং কাউকে তাঁর সঙ্গে শরিক কোরো না। বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, নিকট-প্রতিবেশী, দূর-প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিক, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
প্রতিবেশী আত্মীয় হোক বা অনাত্মীয়, মুসলিম হোক বা অমুসলিম—সব সময় প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে হবে। যত হাদিসে রাসুল (সা.) প্রতিবেশীর ব্যাপারে বলেছেন, সবখানে সাধারণভাবে ‘প্রতিবেশী’ শব্দই ব্যবহার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, প্রতিবেশীর অধিকারের ক্ষেত্রে আত্মীয়তা ও ধর্মীয় সম্পর্কের দিকে ভ্রুক্ষেপ করা হবে না।
আবু উমামা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বিদায় হজের দিন তাঁর উটের ওপর সওয়ার হয়ে বললেন, ‘আমি প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচারের উপদেশ দিচ্ছি।’ কথাটি তিনি এত বেশিবার বললেন যে আমি মনে মনে বললাম, রাসুল (সা.) বুঝি প্রতিবেশীর উত্তরাধিকার সাব্যস্ত করবেন। (তাবরানি)
প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচার ইমানের লক্ষণ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহ ও কিয়ামত দিবসের প্রতি ইমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে।’ (মুসলিম) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যার অনিষ্ট থেকে প্রতিবেশী নিরাপদ নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবেন না।’ (মুসলিম)
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, ইসলাম বিষয়ক গবেষক