হোম > ছাপা সংস্করণ

ক্ষোভ বাড়ছে নাগাল্যান্ডে

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের একটি গ্রামে খড়ের তৈরি এক কুঁড়েঘরের বাইরে বসে ছিল একদল নারী। ঘরের ভেতর থেকে ভেসে আসছিল এক তরুণীর কান্না, মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগেই বিয়ে হয়েছে যার। কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে পাল্টা প্রশ্ন করে মংলং নামের ২৫ বছর বয়সী ওই তরুণী বলেন, ‘এখন আমার দেখাশোনা করবে কে?’

চলতি মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা ভারতের নাগাল্যান্ডের মোন জেলায় নিহত ছয়জনের মধ্যে ছিলেন ওই তরুণীর স্বামীও, নাম হোকুপ কোনিয়াক। কাজ থেকে ফেরার সময় কয়লাখনির একদল শ্রমিকের ওপর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অতর্কিত হামলায় নিহত হয় সে।

এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে হামলা করলে বিক্ষোভকারীদের ওপরও গুলি চালায় সেনারা। এতে প্রাণ হারান আরও আট বেসামরিক। এ ছাড়া সংঘর্ষে ভারতীয় এক সেনারও মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে নাগাল্যান্ডজুড়ে।

এটি ছিল নাগাল্যান্ডে বছরের পর বছর চলে আসা সহিংসতার সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতি। এ ঘটনার পর সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘গভীর ক্ষোভ’ প্রকাশ করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তবে গ্রামবাসীদের বহনকারী ট্রাকটিকে থামতে বলা হলে সেটি দ্রুতগতিতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলেই সেনা সদস্যরা গুলি চালিয়েছে, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্য আরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে বিক্ষোভকারীদের। তাদের অভিযোগ, সেনাবাহিনীর টহল দল ট্রাক থামিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করেছে। আর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই শ্রমিকদের ‘বিদ্রোহী ভেবে’ তারা ‘ভুল করে’ অভিযান চালিয়েছিল।

এদিকে ‘মিথ্যা’ মন্তব্যের জন্য অমিত শাহ-কে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলে গত সপ্তাহে বড় ধরনের একটি সমাবেশ করেছে মোন জেলার গ্রাম্য পরিষদগুলো। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভও অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে দাবি উঠেছে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন (আফস্পা) প্রত্যাহারেরও। ইতিমধ্যে নাগাল্যান্ড ও মেঘালয় সরকার আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে। উত্তর পূর্ব ভারতের বেশির ভাগ আঞ্চলিক দল সেনাবাহিনীর এই বিশেষ ক্ষমতার বিরোধী।

ভারতের সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর হাতে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আফস্পায়। এটি এমন এক আইন যা সশস্ত্র বাহিনীকে যেকোনো ‘অশান্ত এলাকায়’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার বিশেষ ক্ষমতা দেয়। এর আওতায় গুলি চালানোর ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে সেনাদের।

বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকার কিছু পদক্ষেপ নিলেও ক্ষোভ বাড়ছে নাগাল্যান্ডজুড়ে। এই রাজ্যে আদিবাসীদের শীর্ষ সংগঠন নাগা হোহো সতর্ক করে বলেছে, তাদের দাবি পূরণ না হলে চলমান বিক্ষোভ আরও তীব্র হবে। সংগঠনটির প্রধান এইচ কে ঝিমোনি বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমাদের নিরপরাধ সন্তানদের ঠান্ডা মাথায় হত্যার ঘটনার তদন্তে আমরা একটি স্বাধীন কমিশন চাই। সরকার এভাবে আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে পারে না।’ যদিও এ ঘটনায় পৃথক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার ও সেনাবাহিনী।

গত ৪ ডিসেম্বর জঙ্গি সন্দেহে নাগাল্যান্ডে ১৪ বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেন সেনা সদস্যরা। ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের থামার জন্য কোনো সংকেত না দিয়ে সরাসরি গুলি চালায়।

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১৬ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও, সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে গ্রামবাসী।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ