আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে সেগুলো নিয়েই পরিবেশ। যেমন গাছপালা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত প্রভৃতি। পৃথিবীকে দীর্ঘজীবী করা এবং প্রাণিকুলের বাঁচার উপযোগী রাখতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক। বর্তমানে পরিবেশ ধ্বংসকারী নানা প্রতিকূলতার কারণে জীববৈচিত্র্য বিনষ্টের পথে। যেমন সুন্দরবনের গাছপালা কাটার কারণে হিংস্র পশুরা লোকালয়ে আসছে ও পাহাড় কাটার কারণে ঘনঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। কারণ, পরিবেশের একটি উপাদান আরেকটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। পানির সঙ্গে যেমন গাছপালার সম্পর্ক, তেমনি গাছপালার সঙ্গে প্রাণিকুলের সম্পর্ক। পরিবেশের একটি উপাদান বাদ দিলে আরেকটি অচল হয়ে পড়ে। তাই আল্লাহ তাআলা পরিবেশ রক্ষার জন্য মানুষকেই দায়িত্ব দিয়েছেন। কারণ, পরিবেশের ওপর নির্ভর করে মানুষ ও প্রাণিকুল বাঁচে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তিনি পৃথিবীকে বিস্তীর্ণ করেছেন। তার ভেতর থেকে বের করেছেন পানি ও তৃণভূমি। আর পর্বতগুলো তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন—তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর জীবনোপকরণ হিসেবে।’ (সুরা নাযিয়াত: ৩০-৩৩) তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ করুক। আমি তো প্রচুর পরিমাণে পানি বর্ষণ করি। তারপর ভূমিকে যথাযথভাবে বিদীর্ণ করি। এরপর তাতে আমি উৎপন্ন করি শস্য, আঙুর ও শাকসবজি, জয়তুন ও খেজুর বন, ঘন বৃক্ষশোভিত বাগ-বাগিচা, আর ফল ও তৃণগুল্ম—তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর জীবনোপকরণ হিসেবে।’ (সুরা আবাসা: ২৪-৩২) মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি কোনো মুসলমান গাছ লাগায় অথবা শস্য ফলায় এবং তা থেকে কোনো পাখি, মানুষ অথবা চতুষ্পদ জন্তু ভক্ষণ করে, তবে এটি তার জন্য সদকা হবে।’ (মুসলিম)
সুতরাং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য গাছপালা ও পাহাড়-পর্বত না কাটা, পানি ও খাবার অপচয় না করা, বায়ু-পানিকে দূষিত ও নোংরা না করা আমাদের জন্য আবশ্যক।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়