কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চাঁদগ্রাম মধ্যপাড়া গ্রামে গত শুক্রবার দুর্বৃত্তের গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান মণ্ডল নিহত হন। ঘটনার পরদিন রাতে মামলা হয়। এর পর থেকেই গ্রেপ্তার-আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে গ্রামের একটি অংশ। আর এ সুযোগেই বাড়িঘরে নীরব লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। আসামি, তাঁদের আত্মীয়-স্বজনসহ নিরীহ মানুষও লুটপাটের শিকার হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, ঘটনায় জড়িত অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন। আবার যাঁরা জড়িত নন, এমন অনেকেই গ্রেপ্তার-আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। এ সুযোগে বাড়িঘর লুটপাট করা হচ্ছে। তাঁরা আরও জানান, হত্যার ঘটনা ও মামলার পর থেকেই পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার। এ সুযোগে একদল দুষ্কৃতকারী বাড়ি ঘরে লুটপাট শুরু করে। লুটপাটে জড়িত দুষ্কৃতকারীরা সাধারণ ও নিরীহ মানুষের বাড়িতেও লুটপাট চালায়। লুটপাটকারীরা গরু, ছাগল, ফ্রিজ, টিভি, এমনকি জামাকাপড়সহ সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে। খেতের ফসল নষ্ট করছে।
আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমরা কোনো গোষ্ঠীর নয়। মারামারি রেষারেষিতে নেই। এরপরও আমার বাড়িতে লুটপাট করেছে। আমার দুটি গরু, ৮টি ছাগল, আসবাবপত্রসহ ঘরে বিদেশি দামি জিনিসপত্র, যা ছিল সব লুট করে নিয়ে গেছে।’
লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিপক্ষের মণ্ডল গোষ্ঠীর এনামুল বলেন, ‘তাঁরা নিজেরা বাড়ির এসব মালামাল সরিয়ে ফেলেছে। কোনো লুটপাট হয়নি।’
চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, মালিথা ও প্রামাণিক পক্ষের অন্তত ৫০টি পরিবার এখন বাড়িছাড়া। শুক্রবার রাত থেকে মালিথা ও প্রামাণিক বংশ ও তার অনুসারীরা সাধারণ মানুষের বাড়িতে লুটপাট শুরু হয়।’
চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বুলবুল কবির বলেন, ‘অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। দুই একটি ঘটনা ছিঁচকে চোর ঘটিয়েছে। ঘটনার পরদিনই অনেকেই তাদের জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। সে সময় পুলিশ তাদের ছবি ও ভিডিও রেখেছে। লুটপাটের কথা ছড়িয়ে আসামির লোকজন অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
ভেড়ামারা থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর ওই এলাকার অনেকে তাদের নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। লুটপাটের ঘটনা দৃষ্টিগোচরে আসেনি। এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগও আসেনি। নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।