ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় নিখোঁজের দুই দিন পর হাত-পা ও শরীরে পাটা বাঁধা অবস্থায় কাজল বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূর লাশ বাড়ির পাশের পুকুরে ভেসে উঠেছে। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চান্দাইসার গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূ ওই গ্রামের শাহ আলম মিয়ার স্ত্রী।
কাজল বেগম আখাউড়া উপজেলার টনকী গ্রামের খোদা নেওয়াজ মিয়ার মেয়ে। নিহতের মা-বাবাসহ পরিবারের দাবি, স্বামী শাহ আলম যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাঁদের মেয়ে কাজলকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের বাবা খোদা নেওয়াজ বলেন, ১৮ বছর আগে মেয়ে কাজলের সঙ্গে শাহ আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য মারধর করত শাহ আলম। গত দেড় বছর ধরে বেশি মারধর করে আসছিলেন শাহ আলম। কিন্তু অসচ্ছলতার কারণে এক লাখ টাকা এনে দিতে না পারায় কাজলকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে কাজল প্রায় আড়াই মাস ছিল। গত ১০ নভেম্বর কাজলের মেয়ে সোনিয়া আক্তার মাকে নানার বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কাজলকে তাঁর স্বামী শাহ আলম হত্যার পর রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ও শরীরের সঙ্গে পাটা বেঁধে ও মুখমণ্ডল পলিথিনে পেঁচিয়ে বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন বলে অভিযোগ করেন নেওয়াজ।
খোদা নেওয়াজের ভাষ্য, পরে শাহ আলম লোক দেখানো খোঁজাখুঁজি করেন। গতকাল রোববার সকালে স্থানীয় এক বাসিন্দা পুকুরে ভাসমান অবস্থায় কাজলের লাশ দেখতে পেয়ে দেন। সকাল পর্যন্ত শাহ আলম বাড়িতে থাকলেও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি পালিয়ে যান।
নিহতের স্বামী শাহ আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, গ্রামের পাশে পুকুর পাহারা দেন তিনি। স্ত্রী কাজলের মৃত্যুর বিষয়ে কিছু জানেন না। গত শুক্রবার সকাল থেকে নিখোঁজ। তিনি বিভিন্ন কবিরাজের মাধ্যমে তাঁর স্ত্রীকে খুঁজেছেন।
কসবা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাহিদ হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজল বেগমের হাত-পা বাঁধা ভাসমান লাশ দেখা যায়। উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু এখন বলা যাচ্ছে না।’ তবে শিগগিরই এর রহস্য উদ্ঘাটন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।