হোম > ছাপা সংস্করণ

মানবেতর জীবনযাপন শ্রমজীবীদের

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জ পৌরশহরের পশ্চিম তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার শ্রমজীবী স্বপ্না বেগম। মানুষের বাসায় কাজ করে রিকশাচালক স্বামীকে সংসার চালাতে সহযোগিতা করেন। তিন দিন ধরে বাসার ভেতর ও সড়কে কোমরপানি। স্বপ্না বেগম ও স্বামী ঘরে বসে আছেন তিন সন্তান নিয়ে।

যাঁদের একদিন কাজে বের না হলে চুলোয় আগুন জ্বলে না, তাঁরা তিন দিন ধরে ঘরেবন্দী রয়েছেন। সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাঁরা।

স্বপ্না বেগম বলেন, ‘তিন দিন হইছে মানুষের কাছ থাইকা চাইয়া ইট আনছি। ইট দিয়া খাট উচা কইরা বাচ্চা কাচ্চা লইয়া বইয়া থাকি। ঘরে যা আছিল খাবার তা-ও শেষ। মাইনসের বাসাত কাজ না করলে আমার বাচ্চারাও খাইতে পারে না। ওখন কেমনে কিতা করতাম বুঝতাছি না। স্বামীও রিকশা নিয়া বাইর ওইতো পারে না। রাস্তার মাঝে কোমর পানি।’

স্বপ্না বেগমের মতো শ্রমজীবী তুহিনা আক্তারও অন্যের বাসায় কাজ করে সংসার চালান। তাঁদের মতো দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ এখন মানবেতর জীবযাপন করছেন।

তহিনা আক্তার বলেন, ‘আমি তিন দিন ধইরা দুই সন্তান নিয়া ঘরো। পানি বাড়ের আর ঘরো থাকতাম পারছি না। ইতার লাগি আরেক বাসার বারিন্দাত গিয়া উঠছি। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন এখন পর্যন্ত একটা মানুষও আমরার খোঁজ খবর নিলো না।’

গত তিন দিন ধরে উজানের ঢলে সুনামগঞ্জ পৌরশহরের ১৭টি আবাসিক এলাকায় পানি ঢুকেছে। ডুবে গেছে শহরের অন্তত ২০টি সড়ক। পৌরশহরের প্রায় ১ হাজার শ্রমজীবী পরিবার অতি কষ্টে রাত-দিন কাটাচ্ছেন।

এখনো জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। তবে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ।

ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতর পানি ওঠায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। রোগীদের পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও আসতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালে প্রবেশ করছেন নৌকা করে। অন্যদিকে জেলার বন্যাকবলিত পাঁচ উপজেলার অন্তত ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় ক্লিনিকগুলোতে সেবা নিতে আসা লোকজন চরম বিপাকে পড়েছেন।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন বলেন, ‘উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পানি ঢুকলেও আমরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর, গুয়াছোড়া, কলাউড়া, দরিয়াবাজ, আব্দুল্লাহপুর, শ্রিনাথপুর গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন। ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল সালাম বলেন, ‘হঠাৎ কইরা পানি চলে আসছে। খুব বেশি পানির গতি। বাড়িঘরো পানি উঠছে রাস্তাত উঠছে। আমরা মারাত্মক সমস্যাত পইরা গেছি।’

দরিয়াবাজ গ্রামের বাতেন মিয়া বলেন, ‘আমরা যেমন তেমন আমরার গরু-ছাগল আর খড়গুলো নিয়া বিপদো পড়ছি। গরু-ছাগলের ঘরো পানি। তারা খাবার খড়ও ভাসাইয়া নিয়া যাইতাছে।’

এদিকে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার পানি কিছুটা কমলেও এখনো পৌর এলাকাসহ প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষ এখনো পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি আবারও বাড়তে পারে। নিম্নাঞ্চলে কিছু এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জ পৌর এলাকায় কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্যসহায়তা পৌঁছানো হচ্ছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ