হোম > ছাপা সংস্করণ

বলেশ্বর তীরের বন উজাড় ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ

ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)

বাগেরহাটের শরণখোলায় বলেশ্বর নদের তীরের গাছ কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে সবুজ বেষ্টনী। সামাজিক বন বিভাগ ও বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির তদারকি না থাকায় যে যার ইচ্ছেমতো গাছ, ডালাপালা, পাতা কেটে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে।

নদের পাড়ের রায়েন্দার বরইতলা থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার, উত্তর দিকে খোন্তাকাটার রাজৈর থেকে কুমারখালীর দিকে চার কিলোমিটার, বরইতলা থেকে দক্ষিণে আরও প্রায় চার কিলোমিটার এলাকার অসংখ্য ছইলা ও কেওড়া গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।

এই সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস হলে চরম ভাঙনের কবলে পড়বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫ / ১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধ। আবার ঝুঁকির মুখে পড়তে হবে বাঁধের পাশের বাসিন্দাদের।

সরেজমিনে বনায়ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে ডালপালা কেটে গাছ ন্যাড়া করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে সেই গাছ মারা যায়। পরে ওই মরা গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছইলা ও কেওড়া গাছের পাতা ছাগলের উৎকৃষ্ট খাবার। সে কারণে বলেশ্বর পাড়ের বাসিন্দারা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে এই গাছের কচি ডাল-পাতা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন এভাবে পাতা, ডালপালা কাটার ফলে ঘন বন এখন অনেক জায়গায় ফাঁকা হয়ে গেছে। সেসব জায়গায় আবার ভাঙতে শুরু করেছে।

উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের বলেশ্বর পাড়ের বাসিন্দা মো. হারুন ও মাসুম খান বলেন, উপজেলার সদরের রায়েন্দার বরইতলা থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকা ভাঙন প্রবণ। এতে বহু বসতবাড়ি, বাগানবাড়িসহ শত শত একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হাত থেকে এলাকা রক্ষা করতে ২০১০ সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আকনের চেষ্টায় তাঁরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছইলা চারা এনে এখানে রোপণ করে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বেষ্টনী গড়ে তোলেন। সেই গাছ এখন কেটে বন ধ্বংস করা হচ্ছে। তাঁরা নিষেধ করলেও কেউ তা মানেন না।

বলেশ্বরের পাড়ে উত্তর সাউথখালি গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, মানুষ ইচ্ছেমতো গাছ কেটে নিচ্ছে। এই বন না থাকলে বেড়িবাঁধ টিকবে না। স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের বিষয়টি নজর দেওয়া উচিত।

উত্তর সাউথখালি ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য আলামিন খান বলেন ভাঙন ফেরাতে প্রায় ২০-২৫ বছর আগে হাজার হাজার ছইলা ও কেওড়ার চারা লাগিয়ে এখানে বাগান করা হয়। যে কারণে ২০০৭ সালে ভয়াবহ সিডরে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ অনেক তুলনামূলক কম হয়েছে। চরের বাগান এখন বেড়িবাঁধের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে। অথচ সামান্য প্রয়োজনে বাঁধের পাশের মানুষ সেই বাগানে কুড়ালের কোপ বসিয়ে ধ্বংস করছে।

রাজৈর এলাকার বেষ্টনীর পাহারাদার রুহুল আমীন হাওলাদার ও রায়েন্দা গ্রাম পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হারুন মুন্সি বলেন, দিনরাত পাহারা দিয়েও মানুষকে গাছ কাটা থেকে ফেরাতে পারছেন না।

সামাজিক বন বিভাগের উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মিজানুর রহমান বলেন, বলেশ্বর নদের চর এবং বেড়িবাঁধে করা বন রক্ষায় বনায়ন কমিটি রয়েছে। এই কমিটির সদস্যরা বন থেকে ৫৫ ভাগ সুবিধা পাবেন। কিন্তু কমিটির কোনো সদস্য বন রক্ষায় কাজ করেন না। কিছুদিন আগে রাজৈর বনায়ন থেকে গাছ কাটার সময় একজনকে হাতেনাতে ধরে তাঁর কুড়াল জব্দ করেন। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান এসে তাঁকে কুড়ালসহ ছাড়িয়ে নিয়ে যান। বনায়ন কমিটি ও পাহারাদারদের আরও তৎপর হতে বলা হয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাতুনে জান্নাত বলেন, এ বিষয়ে সামাজিক বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ