হোম > ছাপা সংস্করণ

জুমার দিন শ্রেষ্ঠ দিন

ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন; আল্লাহর কাছে সর্বাধিক পছন্দনীয় দিন। মহান আল্লাহ বিশেষ ইবাদতের জন্য এই দিনকে নির্ধারণ করেছেন।

আরবি শব্দ জুমার অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা। সপ্তাহের এক দিন সব মুসলমান একত্র হয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন। যে দিন এই নামাজ আদায় করা হয় তাকে জুমার দিন বলে; যা বাংলায় শুক্রবার। ইসলাম-পূর্ব যুগে জুমার দিনকে আরুবার দিন বলা হতো। মহানবী (সা.)-এর অষ্টম পূর্বপুরুষ কাব ইবনে লুয়াই এই দিন মানুষকে একত্র করে খুতবা দিতেন (সিরাতুল মুস্তফা, পৃ. ২৫)। ইসলাম আগমনের পর এই দিনের নাম জুমার দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এই দিন আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-এর সৃষ্টির যাবতীয় উপাদান একত্র করেছেন। (উমদাতুল কারি, পৃ. ৪৮৭)
মহান আল্লাহর অভিপ্রায় ছিল যে তাঁর বিশেষ বান্দারা একটি বিশেষ দিনে তাঁর বিশেষ ইবাদত করবে। এ জন্য তিনি জুমার দিনকে নির্বাচন করেন। তাঁর সে অভিপ্রায় অনুযায়ী, তাঁর বিশেষ বান্দারা, অর্থাৎ মহানবী (সা.)-এর অনুসারীরা সেই বিশেষ ইবাদতের জন্য এ দিনটি লাভ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমরা, পৃথিবীতে সর্বশেষ আগমনকারীরাই কিয়ামতের দিন অগ্রবর্তী থাকব। তবে পার্থক্য হলো, তাদের আমাদের পূর্বে আল্লাহর কিতাব প্রদান করা হয়েছে আর আমাদের তা প্রদান করা হয়েছে তাদের পরে। এরপর তাদের ইবাদতের জন্য এ দিনটি, অর্থাৎ জুমার দিনকে নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা (ইহুদি-খ্রিষ্টানরা) এ দিনটির ব্যাপারে মতবিরোধ করল। আর আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে আমাদের সঠিক পথ প্রদর্শন করলেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮৩৬; মুসলিম, হাদিস: ২০১৫)

আবু মাসউদ আল-আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, মুহাজিরদের মধ্যে প্রথমে মদিনায় আসেন মুসআব ইবনে উমাইর (রা.)। মহানবী (সা.)-এর আগমনের আগে তিনিই প্রথম সেখানে জুমার দিন লোকদের সমবেত করেন, এরপর তাদের নিয়ে নামাজ আদায় করেন। (আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস: ২৪১)
পরে মহানবী (সা.) পবিত্র মক্কা থেকে মদিনা অভিমুখে হিজরতকালে মদিনার অদূরে কুবা নামক স্থানে সোম থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অবস্থান করেছিলেন।

এরপর জুমার দিন আবার মদিনা অভিমুখে রওনা দেন। পথে বনি-সালিম মহল্লায় জুমার নামাজের সময় হলে সেখানে বনি-সালিম গোত্রের লোকদের নিয়ে মুক্ত পরিবেশে জুমার নামাজ আদায় করেন এবং খুতবা প্রদান করেন। এটিই মহানবী (সা.)-এর প্রথম জুমার নামাজ আদায়। এর পর থেকে আজ পর্যন্ত জুমার নামাজের ধারা চলমান।

জুমার দিন মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবে বিবেচিত হয়।  পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা জুমা নামক স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করে দিনটিকে মহিমান্বিত করেছেন। জুমার নামাজের আদেশ দিয়ে ওই সুরায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে, উত্তম পোশাক পরিধান করে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করে—যদি তার কাছে থাকে, তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে, তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহর জন্য কাফফারা হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪৩) এই দিনের আসর থেকে মাগরিবের মধ্যবর্তী সময়টিতে দোয়া কবুল হয় মর্মেও সহিহ বুখারির এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এই দিনে মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তির জন্যও বিশেষ মর্যাদার কথা সুনানে তিরমিজির এক হাদিসে এসেছে। এ দিনটিকে আল্লাহর ইবাদত-আনুগত্যে বিশেষ মর্যাদায় উদযাপন করা আমাদের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।

লেখক: ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা, সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ