আবাসিক হলের ক্যানটিনে খাবারের দাম কমিয়ে ভর্তুকি বাড়ানোর দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দাবি তুলে ধরা হয়।
সমাবেশে বক্তব্যকালে সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা জানান, ‘করোনার পর হলের খাবারের প্রতিটি আইটেমে চার থেকে ছয় টাকা করে বেড়ে গেছে। খাবারের এমন দাম বাড়ায় করোনা-পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক সংকট বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খাবারের দাম কমিয়ে আনুক।’
জসিমউদ্দীন হলের মহিন শিহাব বলেন, ‘আমরা অনেকেই টিউশনি করে চলতাম। কিন্তু করোনা-পরবর্তী সময়ে ঢাকায় এসে এখনো শিক্ষার্থী পাইনি। আগের টিউশনিগুলোও নেই। এদিকে ক্যানটিন মালিকেরা খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিদিনই ২০-৩০ টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে।’
জগন্নাথ হলের বাসিন্দা জিসান অর্ক বলেন, ‘হলের খাবারের মানও তেমন ভালো নয়। এই খাবার খেয়ে অনেকেই পেটের সমস্যায় ভুগছে। এতে আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অসুস্থ হওয়ার কারণে ক্ষতি হচ্ছে পড়াশোনারও।’
করোনা-পরবর্তী সময়ে অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছে দাবি করে বিজয় একাত্তর হলের কাজী রাকিব হোসেন বলেন, এ সময়ে খাবারের দাম বাড়ানো একধরনের বিলাসিতা। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসে। খাবারের পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। এ সময় তাঁরা চলমান সংকট মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন। বক্তব্য শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে মিছিল করে অপরাজেয় বাংলার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। এটা শিক্ষার্থীদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে প্রতিটি হলে নির্দিষ্ট প্রশাসন রয়েছে। হল অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা খাবারের দাম ও মান নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করুক—এটাই আমার পরামর্শ।’