হোম > ছাপা সংস্করণ

দর্শনার্থী কমেছে সুন্দরবনে

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন। শুধু দেশে নয়, বিশ্বের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম এই বন। শীত মৌসুম এলেই এ বনের সৌন্দর্য দেখতে লাখো পর্যটক এখানে ভিড় করেন। কিন্তু এ বছরের চিত্র ভিন্ন। করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা আর তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে পরিবহন সংকটে সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে পর্যটক ও দর্শনার্থীর সংখ্যা কমেছে।

এ অবস্থায় চলতি বছরে এই খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে বন বিভাগ। সুন্দরবনের পর্যটন স্পটের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এ শঙ্কার কথা জানান।

সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লোনা পানির (ম্যানগ্রোভ) বন এবং প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া এই সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কুমির আর চিত্রা হরিণসহ নানা স্থল ও জলজ প্রাণীর আশ্রয়স্থল এই বনে।

কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে গত বছর থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকার পর পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুললেও গত কয়েক দিনের পরিবহন ধর্মঘটে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী শূন্য হয়ে পড়েছে। এরপর তেলের দাম বাড়ার ফলে পরিবহন ধর্মঘট থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত নৌযানে ভাড়া না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সংশ্লিষ্ট লঞ্চ ও টুরিস্ট বোটচালক ও কর্মচারীরা।

তবে পর্যটন খাতের বিকাশ ধরে রাখতে ক্ষতিপূরণ দিয়ে হলেও এটি ধরে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। ট্যুর ব্যবসায়ী জাহিদ মোল্লা ও নাজমুল হক বলেন, পর্যটনশিল্প আগের চেয়ে বিকশিত হয়েছে। গত দুই বছর করোনার সময় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তারপরও দেশে পর্যটনশিল্প সচল রাখতে ক্ষতিপূরণ দিয়েও এটি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বর্তমানে তেল-গ্যাসের দাম বাড়ায় মানুষের আয়ের তুলনায় খরচ বেশি হয়ে যাওয়ায় তাঁদের আসা-যাওয়ার পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তাই পর্যটনশিল্প কিছুটা হুমকির মুখে।

তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে তেল-গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে লঞ্চ-টুরিস্ট বোটের ভাড়া বাধ্য হয়ে বাড়াতে হয়েছে। এ জন্য সুন্দরবন দেখতে দর্শনার্থীরা আগেই লঞ্চ ও বোট বুকিং দিলেও এখন তাঁরা তা বাতিল করছেন। তারপরও পর্যটনশিল্প ধরে রাখতে ক্ষতিপূরণ দিয়েও তাঁরা হাল ছাড়েননি। তাঁরা দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই খাতে নজর দিলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে।

নীলফামারী থেকে সুন্দরবন দেখতে বাগেরহাটের মোংলায় আসা মাকসুদ করিম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিবছর পরিবার নিয়ে তিনি এখানে আসেন। করোনার কারণে গত দুই বছরে আসা হয়নি। এ বছর ঠিকই এসেছেন। তবে তিনগুণ বাস ও বোট ভাড়া দিয়ে।

করোনা মহামারির আগে শীত মৌসুমে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্র থেকে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। কিন্তু সেখানে এ বছর গত দুই মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা। এমন তথ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, প্রতিবছর এ মৌসুমে বনের করমজল, কটকা, কচিখালী, হারবাড়িয়াসহ অন্তত ১০টি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। সম্প্রতি পরিবহন ধর্মঘটের পরে তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পরিবহন ভাড়া বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। খরচ বেশি হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসতে পারছেন না দর্শনার্থীরা। এ অবস্থায় এ খাত থেকে এ বছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বেলায়েত হোসেন বলেন, একদিকে করোনা, অন্যদিকে তেলের দাম বৃদ্ধি। পরপর দুটি ধকলের প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে। তাই এ বছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তাঁরা।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ দর্শনার্থী সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন। এ সংখ্যা বাড়াতে নানা রকম উদ্যোগ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে এবং সেভাবে কাজও চলছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ