মাগুরা সদর হাসপাতালে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। জরুরি বিভাগে এক সপ্তাহ ধরে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন তাঁদের বেশির ভাগেরই ই ও গায়ে ব্যথার সমস্যা। কারও বা কাশিও রয়েছে। করোনার বর্তমান যে উপসর্গ তা অনেকের মধ্য বিদ্যমান। করোনা পরীক্ষা করাতে বললে অনেকে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমর প্রসাদ এমনটাই জানিয়েছেন আজকের পত্রিকাকে।
জরুরি বিভাগের অপর চিকিৎসক রফিকুল ইসলামসহ আরও দুজন চিকিৎসকের কাছ থেকে জানা যায় বাড়িতে বাড়িতে জ্বর, ঠান্ডা লেগেই আছে। হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিতে। বেশির ভাগেরই জ্বর, সঙ্গে গায়ে ব্যথা। প্যারাসিটামল লিখে দিলেও বলছে এতে নাকি জ্বর যাচ্ছে না। তখন করোনা টেস্ট করাতে বলা হলেও আগ্রহ নেই।
মাগুরায় করোনা শনাক্তের হার এখন ৪৮ শতাংশ। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার মোট নমুনার অর্ধেক করোনা পজিটিভ এসেছে। যাদের বেশির ভাগই কয়েকদিন জ্বর ও শরীরে ব্যথা নিয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। তেমনই একজন রনি তালুকদার।
তিনি মুঠোফোনে জানান, কয়েক দিন ধরে জ্বর। কিছুতেই যাচ্ছিল না। হাসপাতালে দেখালাম বলল পরীক্ষা করাতে। বললাম আমার তো টিকা নেওয়া আছে। বলল তবু পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষা করিয়ে পজিটিভ হয়েছি। তেমন কোনো সমস্যা নেই। জ্বর ছাড়া।
করোনা পজিটিভ হয়েছন মশিউর রহমান। তিনি জানান, আমাদের পরিবারে সকলে জ্বরে আক্রান্ত। আমি সাহস করে করোনা পরীক্ষা করালাম। এখন দেখি পজিটিভ হয়েছি। পরিবারের বাকি সদস্যদের তাই আর পরীক্ষা করানো হয়নি। আমার ধারনা এখন জ্বর হলে পরীক্ষা করালেই পজিটিভ হবে।
কলেজপাড়ার মুদি দোকানি জাহাঙ্গীর জানায়, এখানে অধিকাংশ মানুষ জ্বরে ভুগছে। অনেকে ফোন করে জিনিসপত্র চাইছে।। আমি সেগুলো বাড়ি বাড়ি দিয়ে আসছি। অনেকে করোনায় আক্রান্ত শুনেছি। ঝুঁকি নিয়েই জিনিসপত্র দিতে হচ্ছে।
পুরোনো বাজার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন জানান, এই সপ্তাহ ধরে দেখছি অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। আমার বাড়িতেও অন্তত ৫ জন জ্বরে ভুগছে। ডাক্তার সাধারণ ওষুধ দিচ্ছে। তবে করোনা পরীক্ষা করাতে বলেছে। জ্বর হলেই করোনা পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে। কি একটা পরিস্থিতি।
মাগুরায় ৯ দিনে ১৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছে ৪ জন। করোনা পজিটিভ নিয়ো মারা গেছেন একজন।
মাগুরা সিভিল সার্জন চিকিৎসক শহিদুল্লাহ দেওয়ান জানান, বর্তমান যে আবহাওয়া এতে জ্বর, ঠান্ডায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে কুয়াশা পড়ছে রাতে। এতে শরীরে জ্বর ঠান্ডা লাগারই কথা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান জ্বর ঠান্ডার যে উপসর্গ তা কিছুটা করোনার সঙ্গে মিলে যায়। এ জন্য এসব উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।