শীতের আগমনে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে বাউফল উপজেলার নদ-নদী ও চরাঞ্চল এলাকা। শীতের এই সময়ে বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে উপজেলার চরাঞ্চলসহ তেঁতুলিয়া নদীতে আসে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী (অতিথি) পাখি। অতিথি পাখি শিকার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও একশ্রেণির পাখি শিকারিরা নির্বিচারে পাখি নিধন করে চলেছেন। ফলে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভারসাম্য।
জানা গেছে, শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি সুদূর সাইবেরিয়া থেকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় আসে। জীবনের নিরাপত্তা ও খাদ্য সংস্থানের কারণে অতিথি পাখিরা বেছে নেয় দুর্গম বিলের অভয়ারণ্য এলাকাগুলো। কিন্তু পেশাজীবী পাখি শিকারিরা শীত মৌসুমের আগেই পাখি ধরার বিভিন্ন প্রকার ফাঁদ ও কারেন্টজাল সংগ্রহ করে থাকে।
গত সপ্তাহে এ প্রতিনিধি পরিচয় গোপন রেখে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলার চরে গিয়ে অতিথি পাখি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে। এরপর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিকারি তাঁর বাড়ি নিয়ে গিয়ে ব্যাগে করে ২০টা সরাইল প্রজাতির পাখি দেখায়। দর-কষাকষি করে পাখিগুলো ১ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেন এ প্রতিনিধি।
ওই শিকারি বলেন, ‘শীতকাল আসলেই উপজেলায় কিছু পাখি শিকারি দেখা যায়। যারা চরাঞ্চলে অতিথি পাখি শিকার করে ৩ মাস জীবিকা নির্বাহ করেন।’
সেইভ দি বার্ড অ্যান্ড বি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এম এ বাসার বলেন, ‘অতিথি পাখি নির্বিচারে নিধন প্রতিবছরই হচ্ছে। আমরা জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ক্যাম্পিং করছি।’
উপজেলা বন কর্মকর্তা আবুল কালাম এ বিষয়ে বলেন, ‘বন্য প্রাণী রক্ষা আইন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দণ্ডের বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের জেল, ১ লাখ টাকা জরিমানা। একই অপরাধ পুনরাবৃত্তি করলে ২ বছরের জেল, ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।’