বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাত দুর্নীতির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এ খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ‘অতি দুর্বল’ বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)-এর এক সূচকে উঠে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার সরকারি প্রতিরক্ষা শুদ্ধাচার সূচক ২০২০ নামক সূচকটি প্রকাশ করেছে বার্লিনভিত্তিক এ সংস্থাটি।
টিআই বলেছে, প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ‘অতি দুর্বল’। ৮৬টি দেশ নিয়ে প্রকাশিত এই সূচক অনুযায়ী ৬২ শতাংশ দেশের প্রতিরক্ষা খাত উচ্চ থেকে সংকটজনক দুর্নীতির ঝুঁকিতে রয়েছে। একটি দেশের প্রতিরক্ষা খাতের পাঁচটি ঝুঁকির ক্ষেত্র বিশ্লেষণ করে সূচকটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রগুলো হলো রাজনৈতিক, আর্থিক, জনবল, পরিচালনা ও ক্রয়। এসব ক্ষেত্রে একটি দেশের প্রাপ্ত নম্বরকে (০ থেকে ১০০ স্কেলে) ‘এ’ থেকে ‘এফ’ শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। সার্বিকভাবে ২৫ নম্বর পেয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাত এই সূচকে দুর্নীতির অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। টিআই বলছে, এ সূচকে কম নম্বর পাওয়া দেশগুলোতে প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে থাকা সুরক্ষা পদ্ধতি বা কার্যক্রম-দুর্বল কিংবা অস্তিত্বহীন।
সূচকে বাংলাদেশের এমন ফলাফলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সূচকের ফলাফলকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আমাদের প্রতিরক্ষা শুদ্ধাচার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং তার মাধ্যমে সম্ভাব্য দুর্নীতির প্রতিরোধক সক্ষমতা কাঠামো সুদৃঢ় করা অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে প্রথম ও অতিগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে অবিলম্বে একটি অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ২০১০ এর ধারাবাহিকতায় একটি প্রতিরক্ষা শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন ও তার চর্চা করা উচিত।’
প্রতিরক্ষা শুদ্ধাচার সূচকের ফলাফল বলছে, গোপনীয়তা কোনোভাবেই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য প্রযোজ্য শর্ত নয়, এটি মূলত একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যেমন নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য সূচকে উচ্চ স্কোর করেছে। পাশাপাশি সামরিক বা প্রতিরক্ষা ব্যয়বৃদ্ধি এবং এ খাতের দুর্বল শাসন বা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত।