কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় চরাঞ্চলের পতিত জমি ফেলে না রেখে চিনা আবাদে ঝুঁকছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর কৃষকেরা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকদের কাছে কদর বেড়েছে চিনার। বিলুপ্তপ্রায় এই ফসলটি নতুন করে আশা জাগিয়েছে চরাঞ্চলের কৃষকদের।
নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ঢাকডহর, চৌদ্দকুড়ি, বেরুবাড়ি ইউনিয়নের চর বেরুবাড়ি, কালিগঞ্জ ইউনিয়নের কুমদপুর, কচাকাটা ইউনিয়নের তরিহাটসহ কয়েকটি চরাঞ্চলে চিনা চাষ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে চিনা চাষ হয়েছে। গত বছর উপজেলায় ১৬ হেক্টর জমিতে চিনা চাষ হলেও এবার হয়েছে ৪০ হেক্টর জমিতে। বর্তমানে শিশু খাদ্য তৈরিতে চিনার ব্যাপক চাহিদা থাকায় দাম ও কদর দুটোই বেড়েছে এ শস্যের।
চরাঞ্চলের কৃষকেরা জানান, অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান ঘরে তোলার পর চার মাস ধরে জমি পতিত পড়ে থাকে। পাট চাষের পর ওই জমিতে চিনা চাষ করে থাকেন তাঁরা। চিনার ভালো আবাদ হলে বিঘা প্রতি ৪-৫ মণ ফসল ঘরে তোলা যায়।
চিনাচাষিরা আরও জানান, এই ফসল বিক্রি নিয়েও কোনো ঝামেলা বা চিন্তা নেই। মাড়াই মৌসুমের আগেই পাইকার এসে অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চিনার দাম অনেক কম বলে অভিযোগ কৃষকদের।
কচাকাটা ইউনিয়নের তরিরহাটের কৃষক আবু তালাহা জানান, এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে চিনা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা। ফলন ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি চার থেকে পাঁচ মণ চিনা পাবেন তিনি। বর্তমানে বাজারে মণ প্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার বিক্রি হচ্ছে চিনা।
একই এলাকার নাসির উদ্দিন, জামিউত উদ্দিন জানান, গত বছর চিনার দাম ২৭ শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা থাকলেও এবার মৌসুমের শুরুতে ১২ শ থেকে ১৫ শ টাকার মধ্যে দাম উঠানামা করছে।
কৃষক আশরাফুল আলম জানান, সার তেল খরচ করে চরাঞ্চলে বোরো আবাদের চেয়ে চিনা আবাদ অনেক লাভজনক। এ আবাদে হালচাষ আর বীজ ছাড়া আর কোনো খরচ নাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, চিনা চরাঞ্চলের একটি লাভজনক ফসল। এ ফসল চাষে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে চিনার চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চিনা চাষিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।